National

মানুষ নয়, বন্যপ্রাণিদের জন্য তৈরি হল ব্রিজ

মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এতদিন নানা প্রান্তে ব্রিজ তৈরি হয়েছে। কিন্তু বন্যপ্রাণিদের যাতায়াতের জন্য ব্রিজ কেউ ভেবে দেখেনি। এবার সেটাও হল।

নৈনিতাল (উত্তরাখণ্ড) : ৯০ ফুট লম্বা ব্রিজ। যাতায়াতের জন্য চওড়া ৫ ফুট। মাটি থেকে ৪০ ফুট উঁচু দিয়ে গেছে এই বিশাল ব্রিজটি। ব্রিজটি তৈরিও হয়েছে বনজ সম্পদ দিয়ে। মূলত ব্যবহার হয়েছে নানা মাপের বাঁশ। বাঁধন দিতে কাজে লাগানো হয়েছে পাটের দড়ি।

আর বন্যপ্রাণিরা যাতে বনের জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য খুঁজে পায় সেজন্য পুরো ব্রিজ জুড়ে ব্যবহার করা হয়েছে নানা ধরণের ঘাসের। আর এভাবেই তৈরি হয়েছে এই বিশাল ব্রিজ। যা তৈরি করতে খরচ পড়েছে ২ লক্ষ টাকা। আর ব্রিজ সম্পূর্ণ হতে সময় নিয়েছে ১০ দিন।

এই এত কাণ্ড করে তৈরি ব্রিজটি কিন্তু আদৌ মানুষের যাতায়াতের জন্য নয়। তবে ব্রিজটি একসঙ্গে ৩ জন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের ভার সামলাতে সক্ষম। তা হতে পারে, কিন্তু এতে মানুষের ওঠা মানা।

এ ব্রিজ তৈরি হয়েছে কেবল বন্য প্রাণের কথা মাথায় রেখে। তাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে। তাদের বেঘোরে প্রাণ হারানোয় লাগাম দিতে। এমন ব্রিজ ভারতে এই প্রথম। উত্তরাখণ্ডের বন বিভাগ এই ব্রিজ নির্মাণ করেছে। ব্রিজটি তৈরি হয়েছে রামনগর ফরেস্ট ডিভিশনে।

কেন এমন অভিনব ভাবনা? উত্তরাখণ্ডের এই রামনগর জঙ্গলের মাঝখান দিয়েই চলে গেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাইওয়ে। নৈনিতাল-কালাধুঙ্গি হাইওয়ে দিতে সারাদিন প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করে।

এদিকে ওই জঙ্গলেই রয়েছে লেপার্ড সহ নানা ধরনের প্রাণি ও সরীসৃপ। রয়েছে নানা ধরনের বানর। সরীসৃপরা বনের মধ্যেই ঘুরে বেড়াতে গিয়ে প্রায়ই ওই হাইওয়ে পার করে। আর তখনই ঘটে বিপত্তি।

দেখা যায় ওই হাইওয়ে পার করতে গিয়ে গাড়ির চাকার তলায় প্রাণ হারাতে হয় অনেক ধরনের সাপ, গোসাপ, পাইথনদের। প্রাণ হারায় বড় চেহারার কাঠবিড়ালি থেকে বানর।

এদিকে ওই হাইওয়ে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে সেখানে গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়। তাই ওই হাইওয়ে পারাপারের জন্য বন্যপ্রাণিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে এমন একটি ব্রিজ।

ক্রমে বন্যপ্রাণিরা বুঝতে পারবে ওই ব্রিজ ধরে যাতায়াত করলে তাদের রাস্তায় গাড়ির ধাক্কা খেতে হবে না বা গাড়ির উপদ্রবে পড়তে হবে না। হাইওয়ে টপকে তারা সহজেই জঙ্গলের যেখানে খুশি ঘুরতে পারবে।

ব্রিজটি এমন জায়গায় তৈরি করা হয়েছে যেখানে হাইওয়েটি ইউ-এর মত বাঁক নিয়েছে। জঙ্গলের হাতি, লেপার্ড, নীলগাই, হরিণের মত প্রাণিদের গাড়ির চালকরা চোখে দেখতে পান। ফলে প্রয়োজনে ব্রেক কষতে পারেন।

কিন্তু সরীসৃপদের সবসময় গাড়ি চালাতে চালাতে দেখা মুশকিল। তার ফলে চাকা চলে যায় তাদের ওপর দিয়ে। এখন হয়তো অনেকটা সেই সমস্যা থেকে সুরাহা মিলল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

News Desk

নীলকণ্ঠে যে খবর প্রতিদিন পরিবেশন করা হচ্ছে তা একটি সম্মিলিত কর্মযজ্ঞ। পাঠক পাঠিকার কাছে সঠিক ও তথ্যপূর্ণ খবর পৌঁছে দেওয়ার দায়বদ্ধতা থেকে নীলকণ্ঠের একাধিক বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করছেন। সেই খবর নিউজ ডেস্কে কর্মরতরা ভাষা দিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছেন। খবরটিকে সুপাঠ্য করে তুলছেন তাঁরা। রাস্তায় ঘুরে স্পট থেকে ছবি তুলে আনছেন চিত্রগ্রাহকরা। সেই ছবি প্রাসঙ্গিক খবরের সঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে। যা নিখুঁতভাবে পরিবেশিত হচ্ছে ফোটো এডিটিং বিভাগে কর্মরত ফোটো এডিটরদের পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে। নীলকণ্ঠ.in-এর খবর, আর্টিকেল ও ছবি সংস্থার প্রধান সম্পাদক কামাখ্যাপ্রসাদ লাহার দ্বারা নিখুঁত ভাবে যাচাই করবার পরই প্রকাশিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button