Kolkata

বাংলার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর পা ধরতেও রাজি, ক্ষোভ উগড়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

বাংলার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর পা ধরতেও তিনি রাজি আছেন। এমনই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি তাঁর।

দিঘা থেকে কলকাতা ফিরেই সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় যশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠক নিয়ে ভুল বোঝানো হচ্ছে মানুষকে। যা গত শুক্রবার দিনভর প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে শুরু করে বিজেপির নেতামন্ত্রীরা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সম্পূর্ণ ভুল তথ্য দিয়ে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।

মুখ্যমন্ত্রী কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠক নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানান এদিন। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী বৈঠক ডাকার আগেই তাঁর শুক্রবারের কর্মসূচি স্থির হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তিনি কলাইকুণ্ডা যান।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর বিমান নামছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করানো হয়। তারপর কলাইকুণ্ডায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে মুখ্যমন্ত্রীকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। তিনি এবং মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অপেক্ষা করতে থাকেন।

এসপিজি মাঝে আরও ১ ঘণ্টা অপেক্ষার কথাও বলেছিল বলে এদিন বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কনফারেন্স রুমে গিয়ে দেখা করেন তিনি। রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে দেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রী একটি চেয়ারে বসে ছিলেন। আর তাঁরা ২ জন দাঁড়িয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, তিনি এরপর প্রধানমন্ত্রীকে জানান আবহাওয়া খারাপ রয়েছে। তাঁকে দিঘা যেতে হবে। তাই যদি প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দেন তাহলে তিনি অব্যাহতি চাইবেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমতি নিয়েই এরপর দিঘার উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু ২টি ফাঁকা চেয়ার দেখিয়ে ভুল বোঝানো হচ্ছে। তাঁরা যতক্ষণ দাঁড়িয়ে কথা বলেছিলেন সেই ছবি কেন দেখানো হচ্ছেনা সে প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, কলাইকুণ্ডায় বৈঠক ছিল প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। পরে সেই তালিকা পরিবর্তিত করে নতুন তালিকায় দেখা যায় রাজ্যপাল, এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকেও যোগ করা হয়।

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি এটা আদপে বিজেপির বৈঠকে পরিণত হয়েছিল। আর সেখানে উপস্থিত থাকলে তিনি একা হয়ে পড়তেন। প্রধানমন্ত্রী ২ সপ্তাহ আগেই গুজরাটে গিয়েছিলেন। সেখানে কেন তাহলে বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হল না সে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন দাবি করেন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের হার হজম করতে পারছেনা কেন্দ্র। তাই প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। সারাক্ষণ পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নানাভাবে ডিস্টার্ব করার চেষ্টা করছে তারা। এমনকি প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে গিয়ে কেন্দ্র রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে ৩১ মে কাজে যোগ দিতে বলেছে বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এসব থেকে কেন্দ্রকে সরে আসতে অনুরোধ করছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন সাফ জানান, রাজ্যের স্বার্থে যদি প্রধানমন্ত্রীর পাও ধরতে হয় তাহলেও তিনি রাজি আছেন। বাংলা ও বাংলার মানুষের স্বার্থে এটাও তিনি করতে রাজি।

Show More