State

দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে ডিএম, স্বাস্থ্যসচিবকে ধমক মুখ্যমন্ত্রীর

এক বছর আগে তাঁকে দিয়ে কর্ড ব্লাড ব্যাঙ্কের উদ্বোধন করেছিলেন। কিন্তু এক বছর কেটে গেলেও কেন তা সম্পূর্ণ কার্যকরী অবস্থায় এল না? এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিবকে এ প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে তাঁকে কার্যত ধমকের সুরেই জানান, এভাবে কাজ ফেলে রাখা যাবেনা। তিনি কোনও কথা শুনতে চাননা। দ্রুত এই কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। একথাও স্বাস্থ্যসচিবকে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বারুইপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল সম্বন্ধে ভূরিভূরি অভিযোগের কথাও তোলেন তিনি। সাফ জানান কোনও কথা তিনি শুনতে চাননা। সরকারি হাসপাতালের পরিষেবাকে এই জেলায় আরও ভাল করতেই হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও যাবতীয় সরকারি নির্দেশিকা মেনে মানুষকে পরিষেবা প্রদানের অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি জানিয়ে দেন এবার থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তিনি অনলাইনে তাঁর অভিযোগ জানাতে পারবেন। সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। এদিন ১০০ দিনের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়েন জেলার জেলাশাসক থেকে বিডিওরা। ১০০ দিনের কাজে এই জেলার ফল এত খারাপ কেন সে বিষয়ে জেলাশাসকের কাছে কৈফিয়ত চান মুখ্যমন্ত্রী। বিডিওদেরও দাঁড় করিয়ে করিয়ে জিজ্ঞেস করেন ১০০ দিনের কাজে এত খারাপ ফলের কারণ। পাশাপাশি সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দেন যেন কোনও মানুষ কোনও কাজে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে এলে তাঁদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে না রাখা হয়। এদিনের বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিল ছাত্রছাত্রীরাও। তাদেরকে আইএএস, আইপিএস বা ডাব্লুবিসিএস দিতে অনুপ্রাণিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে জয়নগরের বিধায়ক এদিন বৈঠকেই অভিযোগ করেন স্থানীয় থানার ব্যবহার খুব খারাপ। অভিযোগ শোনার পরই জয়নগর থানার আইসিকে ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দেন এটা সকলের সামনে বিধায়ক বলেছেন বলে তাঁর সঙ্গে যেন অসহযোগিতার রাস্তায় আবার না হাঁটা হয়। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে কোন থানার কোনও পুলিশ কর্মী কি করছেন তা কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি করার বন্দোবস্ত চালু করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতেই পরিস্কার হয়ে যাবে কে কাজ করছে আর কে করছে না। পাশাপাশি কাজের টেন্ডার পেয়ে যারা কাজ ফেলে রাখছেন বা করছেন না, তাদের ব্ল্যাকলিস্ট করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পৈলানের বৈঠক থেকে এদিন বারুইপুর-পদ্মপুকুরে একটি শিল্পতালুকের জন্য জমি বরাদ্দ করেন তিনি। এই জেলায় লোভোল্টেজ সমস্যা রয়েছে। অনেকগুলি লোভোল্টেজ পকেট রয়েছে। এই সমস্যা দ্রুত মেটানোর জন্য নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া বিভিন্ন খাতে ব্যয় বরাদ্দ ঘোষণার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বাসস্ট্যান্ড, নতুন বাস রুট, রাস্তা সংস্কার, সেবা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, নদী সংস্কার সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন তিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বাড়তে থাকা দুষ্কৃতি তাণ্ডব রুখতে পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, বহিরাগতদের এব্যাপারে ভূমিকা রয়েছে। তারা বাইরে থেকে এসে বোমা, গুলি নিয়ে তাণ্ডব করছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন পরিস্কার নির্দেশ দেন, কেউ যদি কোনও রকম গোষ্ঠী সংঘর্ষের চেষ্টা করে তাহলে দুপক্ষকেই ‘পেটান’। এগুলো তিনি কোনওমতেই বরদাস্ত করবেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই জেলা পর্যটনক্ষেত্রে যথেষ্টসম্ভাবনাময়। এই জেলায় সুন্দরবনের মত অরণ্য রয়েছে। বাংলার পর্যটন মানচিত্রে দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে যাতে একটা অন্যতম প্রধান জেলা হয়ে ওঠে সেদিকে নজর দিতে পর্যটন দফতরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

 


আকর্ষণীয় খবর পড়তে ডাউনলোড করুন নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *