World

সময়ের সঙ্গী জীবনের শেষ মুহুর্তের সঙ্গী হয়ে থেকে গেল, জানান দিল তার মালিকের অবস্থান

একটা যুগ ছিল যখন ঘড়ি শুধু সময় দেখাত। যুগ বদলেছে। বদলেছে ঘড়ির ধরণ। সময়ের সাথেই এখন স্থান নির্দেশ করে, এমনকি শরীরের অবস্থাও জানান দেয় ঘড়ি।

একটি ঘড়ি। তবে কাজের ক্ষেত্রে সে আর পাঁচটা সাধারণ ঘড়ির মত নয়। এ এক এমন ঘড়ি যা কোনও ব্যক্তির সঠিক অবস্থান জানায়। একইসঙ্গে তাঁর আশপাশে কি রয়েছে সে সম্পর্কে ওই ব্যক্তি নিজেও একটি স্পষ্ট ধারনা পান।

জিপিএস ঘড়ি বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম ঘড়ি যা কোনও ব্যক্তির অবস্থানের পাশাপাশি তাঁর হাঁটা, দৌড়ানো, ঘুমের পরিমাণ কিংবা হৃৎস্পন্দনের বিষয়েও তথ্য দেয়। এমনই এক জিপিএস ঘড়ি খুঁজে দিল এক হারিয়ে যাওয়া পর্বতারোহীকে।

তিনি আর জীবিত নেই। তবে তাঁর সন্ধানটুকু অন্তত পাওয়া গেছে। আর তাঁর জীবন যাওয়ার কারণ স্বাভাবিক বা কোনও দুর্ঘটনায় যে নয় তাও জানা গেছে। তাঁর জীবন কে কাড়ল তারও সন্ধান মিলেছে। সে বাঘ, সিংহ নয়, আবার মানুষও নয়।

গত ১৪ অগাস্ট জাপানের হোক্কাইডোতে ভাল্লুকের হামলার কবলে এক পর্বতারোহীর প্রাণ যায়। তবে ওই পর্বতারোহীর হাতে থাকা একটি জিপিএস ঘড়ি অনেক কিছু জানিয়ে দিল। যে ঘড়ি ওই ব্যক্তির সঠিক অবস্থান থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে জানান দিয়ে গেছে।

ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ঘড়িটি কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে ওই ব্যক্তির হৃৎস্পন্দনেরও রেকর্ড রেখেছিল। ফলে ভাল্লুকের হামলার মুখে তাঁর শারীরিক অবস্থা কেমন ছিল তাও জানা যায়। ঘড়িতে পাওয়া তথ্য থেকেই জানা যায় গত ১৪ অগাস্ট সকাল ১১টা নাগাদ ওই পর্বতারোহী হাঁটছিলেন।

হঠাৎই তিনি নিচে জঙ্গলের দিকে নামতে শুরু করেন। যেখানে ঝোপঝাড়ের মধ্যে তাঁকে অস্থিরভাবে পা নাড়াতে দেখা যায়। যা ভয় এবং সংঘর্ষের নিদর্শন। ঘড়িটি তখনই শেষবারের মত পর্বতারোহীর হৃৎস্পন্দন রেকর্ড করে। যা ওই ব্যক্তির শেষ মুহুর্তের সাক্ষ্য দেয়।

কিছুক্ষণ পর আবারও ওই ব্যক্তির নড়াচড়া দেখে বোঝা যায় ভাল্লুকটি ফিরে এসে ওই জায়গা থেকে ব্যক্তির দেহ সরিয়ে নেয়। তদন্তকারীরা পরের দিন সেখানে বাদামি রঙের মা ভাল্লুক ও তার ২ শাবকের দেখা পান। মা ভাল্লুকের মুখে ওই ব্যক্তির দেহ ছিল।

পরবর্তীকালে ভাল্লুকগুলিকে শেষ করে দেওয়া হয়। তবে শেষ মুহুর্ত অবধি ওই জিপিএস ঘড়িটি সঙ্গ দিয়েছিল বলেই ওই ব্যক্তির সন্ধান মেলে। নাহলে হয়তো তাঁর খোঁজই কোনও দিন পাওয়া যেত না। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *