National

দেশের একমাত্র ট্রেন যেখানে বিনামূল্যে খাবার পান সব যাত্রী, সঙ্গে রাখতে হয় থালা বাসন

ট্রেনেই খাবার কিনে খেতে হয়। রাজধানী বা দুরন্তের মত ট্রেনে টিকিটের সঙ্গেই খাবারের দাম ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু একটি ট্রেন রয়েছে যেখানে যাত্রীরা বিনামূল্যে খাবার পান।

ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলেছে বহু দূরপাল্লার ট্রেন। সেখানে দীর্ঘ যাত্রাপথে খাবার যাত্রীরা হয় বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন, অথবা ট্রেনেই কিনে খেতে হয়। অনেকে স্টেশন এলে সেখানে প্রয়োজনীয় খাবার কিনে নেন।

অনেকের মনে হতে পারে যে রাজধানী বা দুরন্তের মত ট্রেনে তো খাবার কিনতে হয়না! খাবার কিনতে হয়না কথাটা ভুল। আসলে এসব ট্রেনে খাবারের দাম টিকিটের সঙ্গেই ধরে নেওয়া হয়। তাই কোনও যাত্রী এসব ট্রেনে খাবার না চাইলে তাঁর টিকিটের দাম কমে যায়।

কিন্তু ভারতে এমন একটি ট্রেন রয়েছে যে ট্রেনে যাত্রা মানে সব যাত্রীর জন্য বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা। ৩৩ ঘণ্টার সফরকালে যাত্রীদের খাবার কিনে খেতে হয়না। প্রাতরাশ থেকে রাতের খাবার, সবই বিনামূল্যে পান তাঁরা।

দেশের এই একমাত্র বিনামূল্যে খাবার পাওয়ার ট্রেনটি হল সচখণ্ড এক্সপ্রেস। ট্রেনটি মহারাষ্ট্রের নান্দেড থেকে পঞ্জাবের অমৃতসর পর্যন্ত যাতায়াত করে। ২ হাজার কিলোমিটারের এই যাত্রাপথে ৩৯টি স্টেশনে দাঁড়ায় ট্রেনটি।

নান্দেড-এ রয়েছে হুজুর সাহিব গুরুদ্বার আর অমৃতসরে স্বর্ণমন্দির। ২টিই শিখ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ধর্মীয় স্থান। সেকথা মাথায় রেখে এই ট্রেনের সকল যাত্রীদের জন্য লঙ্গর থেকে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

সকালের প্রাতরাশ থেকে দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার, সবই তাঁরা পেয়ে যান বিনামূল্যে। ট্রেনের শ্রেণিভেদে এই খাবার পাওয়ায় কোনও বিভেদ হয়না। খাবার পরিবেশনের জন্য রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

ট্রেনটি ৩৯টি স্টেশনে দাঁড়ায়। তারমধ্যে নয়া দিল্লি, ভোপাল, পার্ভনি, জলনা, ঔরঙ্গাবাদ ও মারাঠওয়াড়া এই ৬টি স্টেশন থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা ওঠেন। খাবার যাত্রীদের মধ্যে পরিবেশন করেন। শর্ত একটাই। খাবারের জন্য ১ টাকাও লাগবেনা। তবে যাত্রীদের খাবার নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে থালাবাসনটা একটু কষ্ট করে বহন করতে হবে।

খাবারের মধ্যে থাকে ভাত, ডাল, ছোলার তরকারি, খিচুড়ি, আলু ফুলকপির তরকারি এবং নানা সবজির তরকারি। ২৯ বছর ধরে এভাবে নিত্যদিন সচখণ্ড এক্সপ্রেসের যাত্রীদের বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে লঙ্গর থেকে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *