SciTech

৫ হাজার বছরের পুরনো মমির গায়ে ট্যাটু

ঐতিহাসিকদের ধারনাতেই বড়সড় ধাক্কা দিল ৫ হাজার বছর পুরনো মমি। সেযুগের নারীদের শরীরেও থাকত উল্কি। এমনটাই প্রমাণ দিচ্ছে ১টি মমি।

হাল ফ্যাশনের যুগে ‘ট্যাটু’-র চাহিদা তুঙ্গে। দেশবিদেশের রথীমহারথী হন বা সাধারণ মানুষ, উল্কির প্রেমে মজেছেন অনেকেই।

কখনও অক্ষর, কখনও প্রতীক, কখনও বা অর্থপূর্ণ ছবি। নানারকম ট্যাটুর চাহিদার দরুন ট্যাটু পার্লারগুলো এখন ভালোই ব্যবসা করছে। আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে অবশ্য এইরকম পার্লার ছিল না।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

এমনকি সেই যুগে মেয়েদের দেহে ট্যাটু আঁকার কোনও অধিকারও ছিল না। এতদিন এই ধ্যানধারণাই বদ্ধমূল ছিল ঐতিহাসিকদের মনে। সেই ধারনাতেই বড়সড় ধাক্কা দিল মিশর থেকে প্রাপ্ত ২টি মমি।

মিশরের গেবেলেইন মরুপ্রদেশ থেকে প্রাপ্ত মমি ২টির একটি এক নারীর, অপরটি একজন পুরুষের। বর্তমানে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে মমি দুটি। যার মধ্যে নারী মমিটির কাঁধ আর উর্ধ্ব বাহুতে দেখা গেছে পরপর ৪টি ইংরাজি ‘এস’ হরফের মত উল্কির।

Egypt

আর ১০০ বছর আগে আবিষ্কৃত পুরুষ মমিটির উর্ধ্ব বাহুতে পাওয়া গেছে একটি বুনো ষাঁড় ও ভেড়ার উল্কি। ৫ হাজার বছর আগে মিশরীয় নারীপুরুষের এহেন শৌখিনতায় রীতিমত তাজ্জব বনেছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।

মরুপ্রদেশের প্রাচীনতম ২ মমি স্পষ্ট স্বাক্ষর দিচ্ছে, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে একসময় শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় স্বচ্ছন্দে ট্যাটু আঁকাতেন মিশরীয়রা। প্রাচীন মমি দুটির দেহে আঁকা উল্কির বয়স আনুমানিক ৫ হাজার বছর।

হিসাব করলে দাঁড়ায়, খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৫১ থেকে ৩০১৭-র মধ্যে কোন এক সময়ে মিশরের অধিবাসী ছিলেন ওই পুরুষ ও নারীটি। সেইসময় মিশরে হয়ত রাজত্ব করছিলেন প্রথম ফারাও।

পুরুষ মমিটির পরীক্ষানিরীক্ষা করে প্রত্নতত্ত্ববিদরা নিশ্চিত, কোনও ১ আততায়ীর হাতে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। তারপরেই সেই তরুণকে সমাধিস্থ করেন তাঁর আত্মীয়রা।

একইভাবে প্রকৃতির কোলে সমাধি দেওয়া হয় ওই নারীকেও। প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, হাজার হাজার বছর আগে লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলেই ইচ্ছামত শরীরে উল্কি আঁকতে পারতেন।

শরীরে ট্যাটু আঁকার ক্ষেত্রে অন্তত মিশরের নারীদের বিধিনিষেধের মধ্যে পড়তে হয়নি। ত্যাগ, সাহস ও জাদুশক্তির প্রতীক হিসেবেই শরীরের নির্দিষ্ট স্থানে পছন্দসই ট্যাটু আঁকাতেন তাঁরা। আর শক্তি ও ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে শরীরে ট্যাটু আঁকাতেন মিশরীয় পুরুষরা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *