কে কেড়েছিল তরুণীর প্রাণ, ৫০ বছর পর তাকে ধরিয়ে দিল সিগারেটের প্যাকেট
গলা টিপে এক তরুণীর প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছিল ৫০ বছর আগে। পাওয়া গিয়েছিল একটা সিগারেটের প্যাকেট। সেটাই এতদিন পর ধরিয়ে দিল ওই আততায়ীকে।

৫০ বছর কেটে গেছে। কেউ আশাও করেননি যে ওই ২৪ বছরের তরুণীর সম্ভ্রম কেড়ে তাঁর গলা টিপে প্রাণ কাড়ার ভয়ংকর কাণ্ড যে ঘটিয়েছিল তাকে আর কখনও ধরা সম্ভব হবে। ৫০ বছরে সে রহস্য কবেই হিমঘরে ঢুকে গিয়েছিল।
তরুণীর পরিবারের সকলেও ভুলতে বসেছিলেন সেকথা। কিন্তু পুলিশ ছাড়েনি। ১৯৭৭ সালে ওই তরুণীকে শেষবার দেখা গিয়েছিল রাতে একটি পানশালায়। ওই পানশালা থেকে ওই তরুণী এক অচেনা যুবকের সঙ্গে বেরিয়ে যান।
বন্ধুদের জানিয়ে যান কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবেন। কিন্তু তিনি আর ফেরেননি। পরে তাঁর নিথর দেহ পাওয়া যায় একটি বাড়ির কার পার্কিংয়ে থাকা ফোক্সওয়াগান গাড়ির মধ্যে। ওই গাড়িটি তরুণীরই ছিল।
সেখানেই তাঁকে গলা টিপে তাঁর প্রাণ কাড়া হয় বলে জানতে পারে পুলিশ। তার আগে তাঁর সম্ভ্রমও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। একটি ঢোলা পোশাক পরা কেউ একাজ করে বলে জানতে পারে পুলিশ।
কিন্তু তার নাগাল পায়নি। গাড়ি থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যার মধ্যে একটি সিগারেটের প্যাকেটও ছিল। ঘটনাটি ঘটে আমেরিকার সান জোস-এ।
বছরের পর বছর কেটে যেতে থাকে। কিন্তু রহস্যের কিনারা হয়নি। এদিকে এক যুবককে তার পরের বছর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় নয়। অন্য এক অপরাধমূলক ঘটনায়। তার ৪ বছর কারাবাসও হয়।
ইউজেন সিমস নামে ওই ব্যক্তি এরপর ছাড়া পেয়ে অন্যত্র চলে যায়। তারপর বহু বছর কেটে যায়। গতবছর সান্তা ক্লারা কাউন্টি-র পুলিশ আবার সেই হিমঘরে পৌঁছে যাওয়া ঘটনার ফাইল খোলে।
সে সময় যে সিগারেটের প্যাকেটটি গাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল তাতে একটি আঙুলের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল। সেটা রাখা ছিল পুলিশের কাছে। পুলিশের কাছে যে যখনই ধরা পড়েছিল তার আঙুলের ছাপ রেকর্ডে রয়ে গেছে।
প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে সব আঙুলের ছাপ এখন মিলিয়ে দেখার সুবিধা রয়েছে মার্কিন পুলিশের হাতে। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে সিগারেটের প্যাকেটে পাওয়া আঙুলের ছাপটি মিলিয়ে দেখে পুলিশ।
দ্রুত তার মিল পাওয়া যায় সিমসের সঙ্গে। সব পরিস্কার হয়ে যায় পুলিশের কাছে। দ্রুত তাকে ওহিও-তে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৫০ বছর পর জ্যানেট নামে ওই তরুণীর জীবন কেড়ে নেওয়া ব্যক্তির খোঁজ পেয়ে গেল পুলিশ। যার এখন বয়স ৬৯ বছর।
এতদিন পরও যে এভাবে এই রহস্যের কিনারা হবে তা ভাবতেও পারেননি অনেকে। এই রহস্যের কিনারার কাহিনির দেশ বিদেশের সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নিতে দেরি হয়নি।