World

বিশ্বের অন্যতম ভয়ানক জায়গা, পায়ে পায়ে ঘোরে হিস হিস শব্দ

পৃথিবীর নানা দিকে ছড়িয়ে রয়েছে কতই না দ্বীপ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমুদ্রের অক্লান্ত ঢেউ আর নীল আকাশের নিচে সোনালি বালুকাবেলা, সব থাকলেও এ দ্বীপ মানুষের জন্য নয়।

সারাক্ষণ হিস হিস শব্দ। প্রতি বর্গমিটারে কিলবিল করছে কয়েক হাজার সাপ। মানুষ নয়, সাপদের রাজত্ব চলে এই দ্বীপে। দ্বীপটি এতটাই বিপজ্জনক যে সাধারণ মানুষের জন্যে এ দ্বীপে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক জায়গাগুলির মধ্যে একটি বিবেচনা করা হয়।

ব্রাজিলের সাও পাওলো উপকূল থেকে কিছুটা দূরে এই জায়গাটি অবস্থিত। এর নাম ইলহা দা কুইমাদা গ্রান্ডে। আটলান্টিক মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত এই দ্বীপটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অত্যন্ত মনোরম। কিন্তু এখানে ১০৬ একর জায়গা জুড়ে শুধুই সাপের আস্তানা। তাই ভুল করে যদি কেউ সে দ্বীপের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সেখানে পা দিয়ে ফেলেন তাহলে দংশন অনিবার্য।

এর আশপাশে কোনও হাসপাতাল নেই। তাই সাপের কামড় থেকে বাঁচতে কোনও ওষুধ পাওয়া অসম্ভব। নেই কোনও জরুরি পরিষেবার ব্যবস্থাও। তাই একইসঙ্গে মানুষ ও সাপদের রক্ষা করতে ব্রাজিলের নৌবাহিনী এই দ্বীপে মানুষের যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।

কথিত আছে, একসময় ওই দ্বিপে একটি বাতিঘর ছিল। সাপের কামড়ে সেই বাতিঘরের কর্মচারি ও তাঁর পরিবারের জীবনহানি হলে জায়গাটি জনমানবহীন হয়ে যায়। আবার কেউ বলেন জলদস্যুরা সোনা লুঠ করে এনে সেখানে লুকিয়ে রাখত। তবে তারা কেউই সেখান থেকে বেঁচে ফেরেনি।

বিজ্ঞানীদের মতে প্রায় ১১ হাজার বছর আগে পৃথিবীতে তুষার যুগের অবসান ঘটে। তখন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যায়। ফলে দ্বীপটি ব্রাজিলের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন থেকেই সাপগুলো সেখানে আটকে পড়ে।

এই দ্বীপের সবচেয়ে সুন্দর তথা বিষাক্ত সাপ হল গোল্ডেন ল্যান্সহেড। এর বিষ মূল ভূখণ্ডের বিষাক্ত সাপদের চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি। কোনওভাবে যদি তা কোনও প্রাণির শরীরে যায় তাহলে কয়েক মিনিটেই তার জীবন যাবে।

ব্রাজিল সরকার শুধুমাত্র গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীদের এই দ্বীপে প্রবেশের অনুমতি দেয়। তবে গোল্ডেন ল্যান্সহেড-এর বিষ এতটাই মূল্যবান যে তার লোভে অনেকসময় সকলের নজর এড়িয়ে পাচারকারীরা ওই দ্বীপে হানা দিয়ে থাকে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *