কলকাতার কাছেই শাল পিয়ালের জঙ্গলের মাঝে লাল মাটির হাট পর্যটকদের নতুন ঠিকানা
কলকাতা থেকে বেশি দূর নয়। শীতের দিনে সপ্তাহান্তের বেড়ানোয় এখন ভ্রমণ পিপাসুদের নতুন ঠিকানা এই লাল মাটির হাট। উপরি পাওনা অচেনা স্বাদের পিঠে।
মৌসুমি গুহ মান্না, ঝাড়গ্রাম : হাট বললেই সপ্তাহের ১টি বা ২টি নির্দিষ্ট দিনে বসা কোনও বাজারের কথা মনে পড়ে। গবাদি পশু থেকে শুরু করে দৈনন্দিন বাজার দোকানের সামগ্রি, সবকিছুই সেখানে মেলে। তবে কিছু কিছু হাটে আবার প্রথাগত চরিত্রের বাইরে অভিনব জিনিসপত্রও পাওয়া যায়।
শান্তিনিকেতনের খোয়াইয়ে সপ্তাহান্তে এমনই এক হাট বসে। যাকে বলা হয় সোনাঝুরির হাট। তবে এখন খোয়াইয়ের সেই হাটের ছোঁয়া পাওয়া যাবে আরও একটি জায়গায়। শীত পড়লেই পর্যটকেরা একটু একটু করে ভিড় জমান অরণ্য সুন্দরী নামে পরিচিত ঝাড়গ্রাম জেলায়। এক ফাঁকে ঘুরে নেন এই হাট।
গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় মহিলাদের উদ্যোগে ঝাড়গ্রামে একটি হাট বসছে। নাম লাল মাটির হাট। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঝাড়গ্রামের রবীন্দ্র পার্কে প্রতি রবিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা অবধি হাটটি বসে। যা এবছরও ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
উদ্বোধনের দিন হাটে অংশগ্রহণকারী নারীরা ধামসা মাদলের বোলে পা মিলিয়ে একটি পদযাত্রা করেন। প্রতি হাটবারে তাঁরা লাল এবং সবুজের সংমিশ্রণে তৈরি পোশাক পরে হাটে আসেন। এখানেই হাটটির অভিনবত্ব।

জঙ্গলমহলের হস্তশিল্পের প্রচারের পাশাপাশি স্থানীয় নারীরা লক্ষ্মীলাভের আশাতেই শুরু করেছেন এই হাট। এখানে জঙ্গলমহলের মেয়েদের হাতে তৈরি গয়না, শাড়ি, ব্যাগ, ঘর সাজানোর জিনিস থেকে স্থানীয় খাবার, সবকিছুই পাওয়া যায়। এমনকি খিদে পেলে রসনা তৃপ্ত করতে শীতের দিনে মাংস পিঠে আর ডুমু পিঠেও পাওয়া যায় এই হাটে।
শীতের সপ্তাহান্তে ঝাড়গ্রাম ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে এখন নতুন আকর্ষণ এই লাল মাটির হাট। সোনাঝুরির ধাঁচে তৈরি এই হাটে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া থেকে কেনাকাটা, সবই করেন স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকেরা।

হাটটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকে। ঝাড়গ্রাম ঘুরতে গেলে কোনও মল নয়, শপিং করার জন্য ঘুরে আসতে পারেন মাটির গন্ধে ভরা এই খোলা আকাশের নিচের হাটে।













