National

গেরুয়া ঝড়ে ধূলিসাৎ ত্রিপুরার ২৫ বছরের লালদুর্গ

যে দলটা গত বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় একটাও আসন জিততে পারেনি সেই বিজেপি এবার তার জোটসঙ্গীকে নিয়ে ৪৩টা আসন দখল করে ত্রিপুরায় সরকার গড়ার পথে। ২০১৩ সালে ৪৯টা আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসা বামেরা এবার মাত্র ১৬টি আসন পেল। আর বিরোধী কংগ্রেসের কথা তো না বলাই ভাল। গতবারে ১০ আসনে জয়ী হলেও এবার তাদের শূন্য হাতেই ফিরিয়েছেন ত্রিপুরার মানুষ। একই অবস্থা তৃণমূলের। তারাও ত্রিপুরায় কোনও আসন জিততে পারেনি।

ভোটের আগে থেকেই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। রাজ্যের উন্নয়নের ঘাটতি ও কর্মসংস্থানের বেহাল দশা ক্রমশ বাম শাসনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে তুলছিল মানুষকে। এই অবস্থায় তাঁদের বিকল্প রাস্তা ছিল ২টি। হয় কংগ্রেস অথবা বিজেপি। সেই লড়াইয়ে কংগ্রেসকে মাথাই তুলতে দিলনা বিজেপি। বরং উন্নয়নের স্লোগান তারা ত্রিপুরাবাসীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ভোটবাক্সে। তবু মানিক সরকারের স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে সামনে রেখে সেখানে এবারও ক্ষমতা দখলের স্বপ্নে মশগুল ছিল বামেরা। সেই অলীক স্বপ্ন এদিন চুরমার হয়ে গেছে। যে বিজেপির ত্রিপুরায় কোনও জায়গাই ছিলনা, তাদের হাতেই এখন রাজ্য শাসনের অধিকার সঁপে দিয়েছেন সেখানকার মানুষজন।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

গুজরাটে খারাপ ফল, রাজস্থানে বিরোধীদের উত্থান, পঞ্জাবে খারাপ ফল। তার ওপর নীরব মোদী কাণ্ড, নোটবন্দি, জিএসটি নিয়ে ক্রমশ চাপের মুখে পড়া বিজেপিকে এদিন কিন্তু অনেকটা অক্সিজেন দিল এই পূবালী হাওয়া।

বুথ ফেরত সমীক্ষায় বিজেপির ত্রিপুরা দখলের ভবিষ্যতবাণী উঠে এসেছিল। আঁচ পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিধানসভায় জানিয়েছিলেন বামেরা তাঁদের ঔদ্ধত্যের জন্য ত্রিপুরায় হারতে চলেছেন। কিন্তু ত্রিপুরায় বামেরা জয়ী হলে তিনি খুশি হতেন। এই অবস্থায় শনিবার সকালে ফলাফল কেমন হতে পারে তা অনুমেয় ছিল। হলও তাই। এদিন সকাল থেকেই একের পর এক আসনে এগিয়ে যেতে থাকে বিজেপি। মাঝে অবশ্য কিছুটা বামেদের দিকে ঘুরেছিল হাওয়া। কিন্তু তারপর বেলা বাড়তে যে গেরুয়া ঝড় শুরু হল তাতে খড়কুটোর মত উড়ে গেল বামেরা। আর কংগ্রেসকে তো খুঁজেই পাওয়া গেলনা। এখন ২৫ বছরের বাম শাসনে ইতি টেনে ত্রিপুরার শাসনভার সামলাতে চলা নতুন বিজেপি সরকার সে রাজ্যের মানুষের কতটা আশাপূরণ করতে পারে সেদিকেই চেয়ে থাকবেন সকলে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *