National

কৃষক আন্দোলনে জ্বলছে মধ্যপ্রদেশ, বন্‌ধ, পথ অবরোধ, জেলাশাসককে মার

ফসলের ন্যায্য মূল্য ও ঋণ মকুবের দাবিতে কৃষক আন্দোলনে এদিনও জ্বলছে মধ্যপ্রদেশ। গত মঙ্গলবার মান্দসৌরে ২টি পৃথক জায়গায় কৃষক বিক্ষোভ চলার সময় গুলি চলে। প্রথম ঘটনাটি ঘটে পিপালিয়া মান্ডি পুলিশ স্টেশনে। অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ কৃষকরা থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি চালায়। কৃষকদের দাবি সেই সময়ে পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয় ৫ কৃষকের।

যদিও প্রথমে গুলি চালনার কথা অস্বীকার করেছিল রাজ্য পুলিশ। পরে আত্মরক্ষায় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে স্বীকার করে পুলিশ প্রশাসন। তবে সেই গুলি কৃষকদের লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়নি বলেই দাবি করেছে তারা। কিন্তু তা মানতে নারাজ বিক্ষোভরত কৃষকরা। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে এখান থেকে কিছুটা দূরে বাহি গ্রামে। এখানেও বিক্ষোভরত কৃষকদের ওপর গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় ১ কৃষকের। ৬ জন কৃষকের মৃত্যু ও ৮ জন আহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য জুড়েই উত্তাল হয়ে ওঠেন কৃষকরা। যদিও প্রশাসন এই দাবি নস্যাৎ করে গুলি চালানো ও অশান্তির দায় বিরোধীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে। গুলি চালনার ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহান সরকার। অবস্থা সামাল দিতে মান্দসৌরে কার্ফু জারি করা হয়েছে। অশান্তি যাতে দানা বাঁধতে না পারে সেজন্য সাময়িকভাবে সমস্ত মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে মান্দসৌর, রতলাম, মিনাচ এলাকার। যদিও তাতে বিশেষ ফল হয়নি।

এদিন ক্ষুব্ধ কৃষকদের বোঝাতে মান্দসৌরে যান জেলাশাসক। কিন্তু বোঝাবুঝি দূরে থাক, কৃষকদের হাতে মার খেয়ে কোনওক্রমে এলাকা ছাড়তে হয় তাঁকে। ইতিমধ্যেই মৃত কৃষকদের পরিবারপিছু ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। আহতদের ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে এই অবস্থায় এদিন মধ্যপ্রদেশ বন্‌ধের ডাক দেয় কংগ্রেস। বহু জায়গায় পথ অবরোধ করেন কৃষকরা। বিভিন্ন রাস্তা অচল করে দিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।

এই অবস্থায় কংগ্রেসকে একহাত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু। কৃষক আন্দোলনকে রাজনীতির রং দেওয়ার চেষ্টা থেকে কংগ্রেসকে দূরে থাকার কথা জানিয়ে বেঙ্কাইয়ার দাবি, মধ্যপ্রদেশ শান্তির দ্বীপ। এখানে জোর করে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলছেন সত্যিই কি অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে? তাঁদের ব্যাখ্যা, দেশের দুটি কৃষিপ্রধান রাজ্য মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ। এই দুই রাজ্যেই বিজেপির শাসন রয়েছে। মহারাষ্ট্রে বেশ কিছুদিন ধরেই একই দাবিতে বিক্ষোভে সামিল কৃষকরা। সেই আঁচ গিয়ে পড়েছে মধ্যপ্রদেশে। এক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের ঋণমকুবের প্রসঙ্গও উঠে আসছে। ফলে এভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে কৃষকদের জোটবদ্ধ আন্দোলন কিন্তু কেন্দ্রকে স্বস্তিতে রাখবে না। ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এভাবে কৃষক আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকলে বিজেপির সমূহ বিপদ বলেও সতর্ক করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *