National

হিমবাহ ভাঙা হাড় হিম করা তাণ্ডবে তছনছ জোশীমঠ

হিমবাহ ভাঙার তাণ্ডব যে কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি ফের একবার দেখিয়ে দিল। ১৫০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ১৫০-র ওপর মানুষ।

চামোলি (উত্তরাখণ্ড) : বেলা পৌনে ১১টা। আচমকাই একটি হিমবাহ ভেঙে পড়ে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার ঋষিগঙ্গার ওপর। তারপর সেই বিশাল পরিমাণ হিমবাহের জল ভয়ংকর চেহারা নিয়ে উথাল পাতাল করতে থাকে চারধার।

পাহাড়ি নদী ধরে এগোতে থাকে সেই কুণ্ডলী পাকানো বিপুল জলরাশি। এরপর যা পড়েছে তার আশপাশে তাই ধুয়ে নিয়ে গেছে সঙ্গে। সেই তাণ্ডবের কিছু ভিডিও এখন ইন্টারনেটে ভাইরাল।


আকর্ষণীয় খবর পড়তে ডাউনলোড করুন নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

জোশীমঠ পাহাড়ের কাছে বিষ্ণুপ্রয়াগে অলকানন্দা নদীতে এসে মিশেছে ধৌলিগঙ্গা নদী। এই ধৌলিগঙ্গায় প্রবল জলস্ফীতি হয়। অন্যদিকে ঋষিগঙ্গার ওপর একটি জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

যোশীমঠের কাছে রেনি নদীর কাছে তৈরি একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিকরা তখন কাজ করছিলেন। ব্যারেজে কাজ করছিলেন ১০০ জন। আর টানেলে কাজ করছিলেন ৫০ জন। এঁদের ওই বিপুল দানবীয় জলরাশি ধুয়ে নিয়ে যায়। এটা মনে করা হচ্ছে যে এঁদের কেউই আর বেঁচে নেই। এখন একটি একটি করে দেহ উদ্ধার করছে উদ্ধারকারী দল।

১৫০ জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বেশ কিছু গ্রামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৫০-র ওপর মানুষের কোনও খোঁজ নেই। দুর্গম এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকাজে সমস্যা তো হচ্ছেই।

এদিকে যে তাণ্ডব ওই হিমবাহ ভেঙে তৈরি হয় তাতে উত্তরাখণ্ডে ২০১৩ সালের স্মৃতি ফিরেছে। দ্রুত সরকারের তরফে হেল্পলাইন চালু করা হয়। প্রিয়জনের খোঁজ না পেলে সেখানে যোগাযোগ করা যাচ্ছে।

এনডিআরএফ ছাড়াও আধাসামরিক বাহিনীকে কাজে লাগানো হচ্ছে উদ্ধারকাজে। উত্তরাখণ্ডের ৪ জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অনেক গ্রাম থেকে মানুষজনকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

হরিদ্বার পর্যন্ত লাল সতর্কতা রয়েছে। যদিও এটা মনে করা হচ্ছে যে হরিদ্বারে এই তাণ্ডবের প্রভাব পড়বে না। তবে গঙ্গায় জলস্ফীতি হয়েছে।

এই জলরাশির তাণ্ডবে একাধিক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষতি যেমন হয়েছে তেমনই ২টি ঝোলানো ব্রিজ ধুয়ে গেছে। ফলে যোগাযোগে সমস্যা তৈরি হয়েছে।

এছাড়া পাহাড়ি ধসও নেমেছে। গঙ্গার ধারেকাছে যেতে সাধারণ মানুষকে নিষেধ করা হয়েছে। যেখানে হিমবাহটি ধসে পড়ে সেখানে মানুষের বসবাস খুব বেশি না থাকলেও পরপর বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More