National

চাকরি নেই, রাস্তায় বসে নিজের আঁকা ছবি বিক্রি করছেন স্কুল শিক্ষক

স্কুলের শিক্ষকতা করে সংসার প্রতিপালন করছিলেন। কিন্তু চাকরি হারিয়ে এখন সংসার চালাতে ভরসা তাঁর নিজের হাতে আঁকা ছবি।

জয়পুর : রাতদিন এক করেই ছবি এঁকে চলেছেন তিনি। ছবি আঁকাটা চিরদিনই ছিল শখ। ভাল লাগত রং তুলি নিয়ে সময় কাটাতে। মনের কোণে ভেসে ওঠা ফ্রেমগুলিকে বাস্তবে রূপ দিতে। তবে তা ছিল নেহাতই অবসর বিনোদন। নিজের ভাল লাগাটা উপভোগ করা। কয়েক মাস আগেও তাই ছিল। তখনও বোধহয় তাঁর জানা ছিলনা তাঁর এই শখ একদিন তাঁর সংসার প্রতিপালনের একমাত্র মাধ্যম হতে চলেছে।

ক্লাসে ছাত্রদের কোনও কাজ করতে বললে তার আগে একটা প্লিজ জুড়ে দিতেন তিনি। এটা তাঁর অভ্যাস। আর এখানেই আপত্তি ছিল স্কুল পরিচালন সমিতির। কিন্তু তিনি প্লিজ বলার অভ্যাস হঠাৎ করে ছাড়তে পারেননি। মুখ ফস্কে বেরিয়েই যেত। এই কারণেই ঠিক লকডাউন শুরুর আগেই বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি খোয়াতে হয় তাঁকে। তারপর শুরু হয় লকডাউন। ফলে অন্য কোনও স্কুলে চাকরির চেষ্টাও করে উঠতে পারেননি। এদিকে ঘরে জমানো পুঁজি এই কমাসে প্রায় শেষ। এদিকে বাড়িতে তিনি ছাড়াও রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও ২ সন্তান। আর বাড়িতে উপার্জনকারী বলতে তিনি একাই।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

অবশেষে ৪৩ বছরের সুরেশ ঘোতওয়াল স্থির করেন রোজগারের জন্য তিনি তাঁর শখকেই এবার কাজে লাগাবেন। বাড়িতে বসেই এঁকে ফেলেন বেশ কিছু ছবি। তারপর তা নিয়ে সোজা গিয়ে বসে পড়েন জয়পুরের জওহর কলা কেন্দ্রের সামনের রাস্তায়। স্কুলের শিক্ষকতা থেকে রাস্তায় বসে ছবি বিক্রি। না, সুরেশ ঘোতওয়ালের খারাপ লাগেনি। কারণ সংসার তাঁকে চালাতেই হবে।

National News
নিজের আঁকা ছবি হাতে সুরেশ ঘোতওয়াল, ছবি – আইএএনএস

সুরেশ ঘোতওয়াল ২ রকম ছবি এঁকে বিক্রি করছেন। একটির দাম ৫০ টাকা। অন্যটির ১০০ টাকা। ১০০ টাকায় যে ছবিগুলি তিনি বিক্রির জন্য আঁকছেন সেগুলি আঁকার জন্য যথেষ্ট সময় ও পরিশ্রম করতে হয়। তুলনায় ৫০ টাকায় বেচা ছবিগুলি আঁকতে সময় কম লাগছে। তাঁর মতে ৫০ টাকার ১০টি ছবি আঁকতে তাঁর যে সময় লাগে সেই সময় ১০০ টাকার একটা ছবি আঁকতে লেগে যায়।

সময় লাগে লাগুক। সুরেশ ঘোতওয়াল কিন্তু এঁকে চলেছেন। ২ ধরনের ছবিই তাঁর পসরায় জায়গা পাচ্ছে প্রতিদিন। নতুন নতুন ছবি। বিক্রিও নেহাত কম হচ্ছেনা। সুরেশ ঘোতওয়াল নিজেই জানালেন প্রতিদিন ২ ধরনের ছবি মিলিয়ে ১০ থেকে ২০টা বিক্রি হয়েই যায়। যা থেকে হওয়া রোজগারে তিনি এখন পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেওয়াটা অন্তত নিশ্চিত করতে পেরেছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *