National

প্রেমিকাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে মার্বেল বসিয়ে দিল প্রেমিক!

প্রথমে গলা টিপে খুন করে তারপর দেহ ভরা হয় একটা লোহার বাক্সে। মাটি খুঁড়ে সেই বাক্স পুঁতে দিয়ে তার ওপর কংক্রিটের গাঁথনি দেওয়া হয়। তার ওপর বসিয়ে দেওয়া হয় শ্বেত পাথরের মার্বেল। কারও দেখে বোঝার উপায় নেই যে মার্বেলের ওপর দিয়ে তাঁরা ঘরে হাঁটছেন তার তলায় পোঁতা রয়েছে আস্ত এক যুবতীর দেহ! ঘটনা জানার পর মাটি খুঁড়ে পুলিশও থ বনে গেছে! ভোপালের সাকেতনগরের এই ঘটনা আপাতত দেশবাসীর অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাঁকুড়ার বাসিন্দা আকাঙ্ক্ষা শর্মার সঙ্গে পরিচয় হয় ভোপালের এক যুবক উদয়ন দাসের। বাবা ভেলের কর্মী। মা ঝাড়খণ্ডের ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার। উদয়নের বাবা-মায়ের কথা শুনলে অনেকেরই পরিবার সম্বন্ধে ভাল ধারণা জন্মাবে। উদয়ন নিজেও আইআইটির প্রাক্তনী ও পেশায় ব্যবসায়ী। আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সেই উদয়নের পরিচয় ফেসবুকে। ঘনিষ্ঠতাও ফেসবুকেই। এরপর গত বছরের জুন মাসে বাঁকুড়ার রবীন্দ্রপল্লীর বাসিন্দা আকাঙ্ক্ষা জানায় সে আমেরিকায় চাকরি পেয়েছে।

আমেরিকায় চাকরির কথা বলে বাড়ি ছাড়ার পর বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনেই যোগাযোগ রাখত সে। উদয়নের কথাও আকাঙ্ক্ষা জানিয়েছিল বাড়িতে। কিন্তু সেই ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সন্দেহ হয় বাড়ির লোকজনের। ফোন করে করেও মেয়েকে না পেয়ে অবশেষে এ বছর ৫ জানুয়ারি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। উদয়নের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে আকাঙ্ক্ষার পরিবার।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে কোনও আমেরিকা নয়, বাড়ি ছাড়ার পর সব ফোনই ভোপাল থেকে এসেছিল বাঁকুড়ায়। মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন দেখে পুলিশ পৌঁছয় সাকেতনগরে উদয়নের ফ্ল্যাটে। সেখানে জেরা শুরু হয় উদয়নের। সেখানেই একসময়ে ভেঙে পড়ে সে। পুলিশের কাছে স্বীকার করে সেই আকাঙ্ক্ষাকে গলা টিপে খুন করেছে। ভোপালের এই ফ্ল্যাটেই তারা লিভ ইন করত। যদিও পাড়ায় তাদের পরিচয় ছিল স্বামী স্ত্রী হিসাবেই। কিন্তু একসময়ে উদয়নের সন্দেহ হয় আকাঙ্ক্ষা তার সঙ্গে লিভ ইন করলেও অন্য কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। সেই কারণেই তাদের মধ্যে ঝগড়া হত।

ক্রমশ সম্পর্কের তিক্ততা বাড়ছিল। এরপর সে একদিন রাগের বশে আকাঙ্ক্ষাকে গলা টিপে খুন করে পুঁতে দেয় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে উদয়ন। অবশেষে যে প্রেমিকের হাত ধরে একদিন বাড়ি থেকে মিথ্যে বলে বেরিয়ে এসেছিল আকাঙ্ক্ষা সেই প্রেমিকের হাতেই বেঘোরে প্রাণ হারাতে হয় তাঁকে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *