National

স্কুলের জমি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল স্কুলের মালিক ও অধ্যক্ষের দেহ

স্কুলের সামনে অনেকটা ফাঁকা জমি। সেই জমিতে খেলা করে স্কুলের বাচ্চারা। স্কুলের সেই খোলা চত্বরের জমি খুঁড়তেই সোমবার বেরিয়ে এল ২টি দেহ। এখনও পচন ধরেনি। ১ জনের বয়স ৫০ বছর। দ্বিতীয় জনের বয়স ৪৫। প্রথমজন স্কুলের মালিক। আর দ্বিতীয়জন সৈনিক ভারতী ইন্টার কলেজের অধ্যক্ষ। দুজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এখানে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ৪ জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

স্কুলের মাটি খুঁড়ে ২টি দেহ পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে আগ্রার কউলাখা এলাকায়। এখানেই রয়েছে সৈনিক ভারতী ইন্টার কলেজ ও বিআর আম্বেদকর স্কুল। যার মালিক সুরিন্দর লাভানিয়া। সুরিন্দর ওম বিহার এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্কুলটি কয়েক বছর হল ভাড়া দিয়েছিলেন ধীরজ নামে এক ব্যক্তিকে। ধীরজই স্কুল চালায়। তার বিনিময়ে ভাড়া দেওয়ার কথা লাভানিয়াকে। কিন্তু সেই ভাড়া সে গত ২ বছর ধরে দিচ্ছিল না। পুলিশ জানাচ্ছে, ভাড়া না মেটানোয় ধীরজের সঙ্গে বেশ কয়েকবার তিক্ত বাক্য বিনিময় হয়েছিল সুরিন্দরের। গত শুক্রবার ধীরজের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করতে লাভানিয়া তাঁর মালিকানাধীন সৈনিক ভারতী ইন্টার কলেজের অধ্যক্ষ বিজয় কুমার ঝা-কে পাঠান। বিজয় কুমার ঝা এসে উপস্থিত হন বিআর আম্বেদকর স্কুলে। সেখানে ধীরজের ঘরে বেশ কিছুক্ষণ ভাড়ার টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধীরজ ও বিজয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর ঝগড়া চরমে উঠলে ধীরজ, তার ২ ভাই সন্দীপ ও নীরজ এবং ধীরজের বন্ধু বিজয় সিং মিলে বিজয় কুমার ঝাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে।


আকর্ষণীয় খবর পড়তে ডাউনলোড করুন নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

পুলিশ জানাচ্ছে, ৪ জন দেহটি লোপাট করার তোরজোড় করছিল এমন সময় হঠাৎই সেখানে হাজির হন সুরিন্দর লাভানিয়া। এসেই ধীরজের কাছে জানতে চান বিজয় কুমার ঝা কোথায়? ধীরজ জানায়, তিনি একটু আগেই বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু সন্দেহ হয় লাভানিয়ার। তিনি পাল্টা জিজ্ঞেস করেন তিনি যদি চলেই গিয়ে থাকেন তবে তাঁর বাইক নিচে রয়েছে কেন? এরপরই আচমকা সেখানে দাঁড়িয়ে লাভানিয়া বিজয় কুমার ঝায়ের ফোনে ফোন করেন। ফোন বেজে ওঠে। বেজে ওঠে ধীরজের বুক পকেট থেকে। কারণ ধীরজের বুক পকেটে রাখা ছিল মৃত বিজয় কুমার ঝায়ের ফোনটি। লাভানিয়া এবার পুরো ঘরটা তল্লাশি করতে শুরু করেন। আর তখনই তাঁর নজর পড়ে ধীরজের অফিস ঘরের পর্দার দিকে। পর্দার পিছনে কিছু একটা পড়ে আছে না! লাভানিয়া এগিয়ে দেখেন সেখানে লুকোনো রয়েছে বিজয় কুমার ঝায়ের মৃতদেহ।

বিজয় কুমার ঝাকে যে খুন করা হয়েছে তা বুঝতে বাকি থাকেনা লাভানিয়ার। তবে তা কাউকে জানানোর সুযোগ তিনি পাননি। ৪ জনে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারপর ২টি দেহ স্কুলেরই কম্পাউন্ডের মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেয়। এদিকে দুজন নিখোঁজ হওয়ার খবরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিকদের তৎপরতা ও বুদ্ধিমত্তায় মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্যভেদ হয়ে যায়। গ্রেফতার হয় ধীরজ সহ ৪ জন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পুরো কাহিনি পুলিশের কাছে পরিস্কার হয়ে যায়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *