SciTech

বিশ্বের বৃহত্তম মরুভূমিই বাঁচিয়ে রেখেছে বিশ্বের বৃহত্তম জঙ্গলকে, অবাক শোনালেও এটাই সত্যি

এই প্রকৃতির প্রাণদায়ী উপাদান বলতে মানুষ কেবল জল, বায়ু, আলো ইত্যাদিকেই বোঝে। তবে কখনও কখনও জানা বোঝার বাইরেও একটা জগত থাকে। সেখানেই পাওয়া যায় নতুন কিছুর খোঁজ।

বালি তো সবাই চেনেন। নদীর চরে, সমুদ্রের ধারে কিংবা মরুভূমি জুড়ে বালির চাদর দেখেছেন প্রায় সকলেই। বালির ধরন এবং রং স্থানভেদে আলাদা হয়। কোথাও হলুদ আবার কোথাও সাদা তো কোথাও গোলাপি বালি দেখা যায়। সেই বালিও যে জীবনদায়ী হতে পারে তা অবশ্য অনেকেরই অজানা।

আশ্চর্যের বিষয় হল একটি মরুভূমির বালি কোনও এক বিরাট অরণ্যের প্রাণ বাঁচানোর কাজে লাগে। মরুভূমিতে অবস্থিত টিলাগুলিকে দেখে ফাঁকা বালি বা পাথরের ঢিবি বলে মনে হলেও আসলে তারাই এই কাজটি করে থাকে। কারণ সাহারা মরুভূমির ওপর অনেকটাই নির্ভর করে অ্যামাজনের বেঁচে থাকা।

সারা পৃথিবীর কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ আর অক্সিজেন নিঃসরণের জন্য অ্যামাজনের ভূমিকা অনন্য। পৃথিবীর সেই সবচেয়ে বড় অরণ্য অ্যামাজনের প্রাণ রক্ষা করে সাহারা মরুভূমি। প্রতিনিয়তই অ্যামাজনের পরিস্কার ধুলো আর ফসফরাসের প্রয়োজন হয়। সেই ফসফরাসের যোগান দেয় সাহারা।

সাহারা মরুভূমি থেকে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টন বালি বাতাসে ভেসে পৌঁছয় অ্যামাজনের জঙ্গলে। এই বালির মধ্যেই থাকে অ্যামাজনের প্রয়োজনীয় ফসফরাস। বালিতে উপস্থিত এই ফসফরাসের পরিমাণ খুবই কম। মাত্র ০.০৮ শতাংশ। কিন্তু এটুকুই অনেক বড় কাজে লাগে।

NASA
শিল্পীর কল্পনায় সাহারা থেকে বালির অ্যামাজন অভিযান, ছবি – সৌজন্যে – নাসা ডট গভ

ফসফরাস যুক্ত ওই বালি বাতাসে ভেসে প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সাহারা মরুভূমি থেকে অ্যামাজনের অরণ্যে পৌঁছয়। সেখানে এই বালি ফসফরাসের সঙ্গে আরও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজেরও যোগান দেয়। এই খনিজ উপাদানগুলি গাছদের জন্যে ভিটামিনের মত কাজ করে।

প্রাকৃতিক এই সাপ্লিমেন্ট ছাড়া অ্যামাজনের জঙ্গল একেবারে ম্লান হয়ে যেত। নাসার উপগ্রহে এই অবিশ্বাস্য প্রাকৃতিক সংযোগের ছবি ধরা পড়েছে। তাই শুধু গাছ নয় মরুভূমিও পৃথিবীর ফুসফুসকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *