মানুষের সমান পয়সা দিয়ে হয় কেনাবেচা, কোথায় রয়েছে এমন জায়গা
বিশ্বের যে প্রান্তেই যাওয়া যায় টাকা পয়সা পকেটে নিয়ে যাওয়া যায়। পার্সে রাখা যায়। এখানে পয়সা নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকজন মানুষ লাগে।
টাকা পয়সা তো যত্ন করে রাখার জিনিস। তা তো আর কেউ রাস্তায় ছড়িয়ে রাখে না। কিন্তু এখানে ঠিক সেটাই হয়। পয়সা পড়ে থাকে রাস্তায়। সকলের চোখের সামনে। পয়সা তো সকলে পকেটে বা পার্সে বা মানিব্যাগে রাখেন। কিন্তু এখানে পয়সা রাখা থাকে যেখানে সেখানে।
পয়সা নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে গেলে আরও লোকজনের প্রয়োজন হয়। একার পক্ষে পয়সা নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পয়সায় তাই মাঝে ফুটো করা থাকে। যাতে তার মধ্যে দিয়ে মোটা বাঁশ বা লাঠি ঢুকিয়ে কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া যায়।
অবাক করা হলেও এটাই সত্যি। মাইক্রোনেশিয়ার ইয়াপ দ্বীপের বাসিন্দারা তাঁদের নিজস্ব মুদ্রা হিসাবে এক মানুষ সমান লাইম স্টোনের অতিকায় গোলাকার পাথর ব্যবহার করেন।
সেসব পাথরের মাঝে ফুটো করা হয় যাতে তা মানুষজন তুলে নিয়ে যেতে পারেন। এই পয়সাই বিংশ শতাব্দীর আগে পর্যন্ত ছিল এই দ্বীপের মানুষজনের কাছে একমাত্র বিনিময় মাধ্যম।
এখন সেখানে সাধারণ মুদ্রার প্রচলন থাকলেও ইয়াপিরা তাঁদের এই রাই নামের প্রাচীন মুদ্রাকে ফেলে দিতে পারেননি। এখনও বিয়ে বা কোনও অনুষ্ঠানে আর্থিক দান বা কোনও সামাজিক ক্ষেত্রে আর্থ প্রদানের জন্য এই কয়েন ব্যবহার করা হয়। যা এ দ্বীপে গেলে চারধারে রাস্তার ওপরই পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ইয়াপ দ্বীপের এই অতিকায় পাথরগুলি পরীক্ষা করে দেখা গেছে সেগুলির বয়স প্রায় ২ হাজার বছর। ঠিক কবে থেকে কেন এই মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়েছে তা এখনও অজানা।
তবে তা যে বহু প্রাচীনকাল থেকেই এখানকার বিনিময় মাধ্যম তা গবেষকদের কাছে পরিস্কার। এখন সামাজিক আদানপ্রদান বাদ দিয়ে বাকিটা মানুষের চেনা মুদ্রা দিয়েই হলেও এখনও এই রাই মুদ্রা ইয়াপিদের কাছে একটা আবেগ।