Kolkata

মেট্রোয় এসি রেকে আগুন, কামরায় আটকে অসুস্থ অনেক যাত্রী

বহু মানুষ হাউ হাউ করে কাঁদছেন। বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তাঁরা এ যাত্রায় বেঁচে গেছেন। অনেকেই অসুস্থ। তাঁদের স্ট্রেচারে করে বাইরে বার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাঁরা পায়ে হেঁটে আসছেন তাঁদের চোখে মুখে স্পষ্ট আতঙ্কের ছাপ। সেই সঙ্গে ছিল একরাশ ক্ষোভ। কীভাবে যে সেই আতঙ্কের মিনিট চল্লিশ তাঁরা বন্ধ কামরায় কাটিয়েছেন তার বিবরণ দিতে গিয়ে তখনও কেমন যেন গলা শুকিয়ে যাচ্ছে তাঁদের। অনেকেই ময়দান মেট্রো স্টেশনেই বসে পড়েন। অন্য যাত্রীরাই সাহায্যে এগিয়ে আসেন। জল খাওয়ান। চেষ্টা করেন তাঁদের সুস্থ করে তুলতে। চারদিকে চিৎকার, চেঁচামেচি, কান্না, রাগ। এমনই এক ভয়ানক ছবি এদিন বিকেলে দেখা গেল ময়দান মেট্রো স্টেশন চত্বরে।

এদিন বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ একটি এসি মেট্রোয় আগুন লাগে। ইঞ্জিন থেকে প্রথম কামরার পর দ্বিতীয় কামরাতে আগুনটা লাগে। বিকট কিছু শব্দ করে ট্রেনটি এগোচ্ছিল। বেশ কিছুটা ওই অবস্থায় ছুটে তা থমকে যায় স্টেশনের কাছেই টানেলের মধ্যে। আগুন থেকে তৈরি ধোঁয়ায় ভরে যায় এসি কামরা। নিভে যায় আলো। কেবল জ্বলছিল এমারজেন্সি লাইট। এই অবস্থায় কামরার মধ্যেই তৈরি হয় আতঙ্ক। যাত্রীদের দাবি, মেট্রো থমকে যাওয়ার পর কামরা ধোঁয়ায় ভরে যেতে থাকে। এই অবস্থায় তাঁরা কামরায় থাকা নম্বরে ফোন করে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে নাকি ফোনই তোলা হয়নি। এই অবস্থায় যত সময় কাটতে থাকে ততই আতঙ্ক আরও চেপে বসে সকলের মধ্যে। কামরার মধ্যেই একের পর এক অসুস্থ হতে থাকেন যাত্রীরা।

যাত্রীদের অভিযোগ, মেট্রো কর্তৃপক্ষ কী হয়েছে সে সম্বন্ধেও তাঁদের অবহিত করার প্রয়োজন বোধ করেনি। কোনও ঘোষণা ছাড়াই প্রায় চল্লিশ মিনিট কামরার মধ্যে দমবন্ধ অবস্থায় আটকে ছিলেন তাঁরা। ধোঁয়া কাটাতে ও কামরা থেকে বার হতে কয়েকজন যাত্রী এসি রেকের কাচের জানালাও ভেঙে ফেলেন। সেই ফাঁক গলে কয়েকজন বেরিয়েও আসেন। অবশেষে মেট্রো কর্তৃপক্ষ, দমকল ও পুলিশ যৌথভাবে যাত্রীদের উদ্ধার করা শুরু করে। লাইন দিয়ে বার করে আনা হয় তাঁদের। বেশ কয়েকজন যাত্রীকে স্ট্রেচারে করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই ঘটনার জেরে ব্যস্ত সময়ে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো পরিষেবা। পরে পার্ক স্ট্রিট থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল বন্ধ রেখে বাকি অংশে মেট্রো চলাচল শুরু হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *