১২৪ বছর ধরে উল্টো ট্রেনে ঝুলে সফর করছেন যাত্রীরা, এ এক বিরলতম অভিজ্ঞতা
ট্রেনে তো সকলেই চড়েন। চলার পথে নানাধরনের অভিজ্ঞতাও হয়। কিন্তু কেমন হয় যদি সেই ট্রেনের চাকাই নিচে না থেকে মাথার উপর ঝোলে?
প্রথম ঝটকায় মনে হবে এ বুঝি কোনও কল্পবিজ্ঞানের গল্প। সমতলে পেতে রাখা লাইন দিয়ে না চলে একটি ট্রেন হঠাৎ উপর থেকে ঝুলছে! ট্রেনে চড়ে যাওয়ার সময় ট্রেনের চাকা যদি নিচে না থেকে মাথার উপরে থাকে?
বিরল এই ঝুলন্ত ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতা রূপকথার মত। এই ‘উপারটাল ঝুলন্ত রেল’ কিন্তু বিশ্বের ইতিহাসে নতুন কোনও ঘটনা নয়। ট্রেনটি দীর্ঘ ১২৪ বছর ধরে এভাবেই চলেছে। ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই ট্রেন পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
১৯০১ সাল থেকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে জার্মানির উপার নদীর উপর দিয়ে এই ট্রেনটি যাতায়াত করে চলছে। ট্রেনটির নাম ‘সাসপেন্ডেড মোনোরেল’। নদীর উপর দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় যাতায়াতের মাধ্যমে এটি শহরের প্রধান স্থানগুলিকে যুক্ত করে। প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার যাত্রী ট্রেনটিতে যাতায়াত করেন।
অভিনবত্বের কারণে ইতিহাসের পাতায় নাম তুললেও আসলে কিন্তু জার্মানির ভৌগলিক অবস্থানের জন্যই ট্রেনটি তৈরি হয়। জার্মানির রাস্তার যানজটকে সামাল দিয়ে রেলপথ বানানোর চিন্তা থেকে জার্মান ইঞ্জিনিয়ার ইউজেন লানজেন এই ট্রেনের নকশা তৈরি করেন।
লানজেন এমন একটি ট্রেন তৈরি করতে চেয়েছিলেন যাতে নদী উপত্যকার কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হয়। আবার যার কারণে রাস্তার যানজটও বেড়ে না যায়। তাই তিনি সমতলের বদলে মাথার উপর ধনুকাকৃতির রেলপথ বানিয়ে ঝুলন্ত ট্রেনের উদ্ভাবন করেন।
১৩.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে ট্রেনটি মাটি থেকে প্রায় ২৯ ফুট উচ্চতায় ঝুলন্ত অবস্থায় চলে। সমগ্র যাত্রাপথে মাত্র ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি ২০টি স্টেশন অতিক্রম করে। ট্রেনটি দেখতে উল্টো হলেও তার ভিতরে প্রবেশ করলে আর পাঁচটা ট্রেনের মতই। এই উল্টো ট্রেনের টানেই উপারটাল শহরটি গোটা বিশ্বে আলাদা পরিচিতি পেয়েছে।













