৬৩২ বছর ধরে তৈরি হয়েছিল এই গির্জা, যার জানালা এক অন্যই আকর্ষণ
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থাপত্য রয়েছে। যাদের মধ্যে অনেকগুলি আবার সময়ের সাথে সাথে ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। তবে এমনও কিছু শিল্পকর্ম রয়েছে যা গড়ে উঠেছিল ৬৩২ বছর ধরে।
এমন একটি গির্জা রয়েছে যার নির্মাণ সময় সম্পর্কে জানলে যে কেউ অবাক হয়ে যেতে পারেন। এটি কোনও সাধারণ গির্জা নয়, এর অসামান্য স্থাপত্য শৈলীর কারণেই এই নির্মাণটি আজও বিশ্বের চমৎকার স্থাপনাগুলির মধ্যে একটি।
গির্জাটির নাম কোলন ক্যাথিড্রাল। যার নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১২৪৮ খ্রিস্টাব্দে। আর কাজ শেষ হয় ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে। তহবিলের অভাব, স্থাপত্য শৈলীর পরিবর্তন এবং তৎকালীন ইউরোপের বিভিন্ন সমস্যার কারণে নির্মাণের কাজ বারবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর দীর্ঘ সময় কাটিয়ে ফের শুরু হয় কাজ। আর তার জেরেই এটি তৈরি সম্পূর্ণ হতে লেগে যায় ৬৩২ বছর।
এই কোলন ক্যাথিড্রাল জার্মানিতে অবস্থিত। এটি জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় দ্রষ্টব্য তথা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে পরিচিত। ক্যাথিড্রালটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ জন কর্মী কাজ করে চলেন।
এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গথিক শৈলীর ক্যাথিড্রাল। গির্জাটির উচ্চতা ১৫৭ মিটার। এই গির্জাটি তৈরি করতে প্রায় ৩ লক্ষ টন পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল। ক্যাথিড্রালটি ট্র্যাকাইট, বেলেপাথর ইত্যাদি বিভিন্নরকম পাথর দিয়ে তৈরি। এর কিছু ভাস্কর্য এবং ছাউনি চুনাপাথর দিয়ে তৈরি।
এই ক্যাথিড্রালের রঙিন কাচের জানালাগুলি খুবই আকর্ষণীয়। গির্জাটিতে ১০ হাজার বর্গমিটার জুড়ে শুধু জানালা তৈরি করা হয়েছিল। আজও এটি বিশ্বের যেকোনও গির্জার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জানালার গির্জা বলে পরিচিত।
ক্যাথিড্রালের প্রাচীনতম জানালাগুলির মধ্যে একটি হল বিখ্যাত বাইবেল উইন্ডো। যা নাকি বাইবেলের গল্প বলে। মধ্যযুগের কিছু জানালা আজও সংরক্ষিত রয়েছে। কিছু পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
ক্যাথিড্রালের ছাদটি কাঠের বদলে লোহা দিয়ে তৈরি। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই ছাদ ক্যাথিড্রালকে গুরুতর ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছিল। এটি ২০ হাজারেরও বেশি লোক ধারণ করতে পারে। প্রাচীন এই ক্যাথিড্রালটি এখনও একইভাবে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।













