পৃথিবী চিরদিন নীল সবুজ ছিলনা, ছিল অন্য রংয়ের, কোন রং জানালেন গবেষকেরা
পৃথিবী কি তার জন্মলগ্ন থেকেই এমন নীল আর সবুজের মিশেল ছিল। কয়েকজন গবেষক কিন্তু মনে করেন পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বের প্রথমাবস্থায় পৃথিবীর রং ছিল অন্য।
পৃথিবী কোনও একসময় বেগুনি রংয়ের ছিল। এমনই দাবি একাংশের বিজ্ঞানীর। রং সম্পর্কে জানতে গেলে তাকে মহাকাশ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কারণ একমাত্র মহাকাশ থেকে তোলা ছবিতেই পৃথিবীর বেশিরভাগ অংশকে নীল দেখা যায়। কারণ পৃথিবীতে ৩ ভাগ জল আর ১ ভাগ মাত্র স্থল রয়েছে।
পৃথিবীর নীল রঙের অংশ বাদ দিলে বাকি অল্প কিছু জায়গাকে সবুজ দেখতে লাগে। স্থলভাগের যে অংশগুলি জুড়ে অরণ্য রয়েছে সেগুলো সবুজ আভা ছড়ায়। বর্তমান পৃথিবীর এই রং কিন্তু সবসময় এরকম ছিলনা। আদিকালে এই পৃথিবী অন্য এক রংয়ের ছিল।
একাংশের বিজ্ঞানীর দাবি, সৃষ্টির আদি যুগে পৃথিবীর রং ছিল বেগুনি। সে সময় পৃথিবীতে যে অতিক্ষুদ্র জীবাণুরা ছিল তারা সূর্যের আলো শুষে নেওয়ার জন্য ক্লোরোফিল কাজে লাগাত না। বরং সে জায়গায় অন্য একধরনের অণু কাজে লাগাত।
তখন এক বিশেষ ধরনের এককোষী জীব পৃথিবীতে বাস করত। আলো থেকে শক্তি তৈরি করতে পারত তারা। আর সেটা করতে ক্লোরোফিল নয়, অন্য যে অণু ব্যবহার করত তারা, তার জেরেই তাদের রং বেগুলি হত।
এই বিশেষ প্রজাতির এককোষী জীবগুলির ওপর আলো পড়লে তাদের বেগুনি দেখাত। যেহেতু তখন সারা পৃথিবীজুড়ে এই জীবরাই ছিল তাই তাদের কারণে পৃথিবীর রংও বেগুনি বলে মনে হত।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম এই বিষয়ে তথ্য দেন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব অ্যাস্ট্রোবায়োলজিতে তাঁদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়। ওই গবেষণাপত্রে তাঁরা দাবি করেন রেটিনাল নামে একটি ক্রোমোপ্রোটিন আলোর উপস্থিতিতে বেগুনি রং তৈরি করতে পারে।
পৃথিবীতে ক্লোরোফিলযুক্ত জীবের জন্মের আগে পর্যন্ত ওই এককোষী জীবরা ক্রোমোপ্রোটিনের সাহায্যেই শক্তি তৈরি করত। তবে তারা অক্সিজেন বা শর্করা তৈরি করতে পারত না।
এছাড়া ওই এককোষী জীবরা ক্লোরোফিলের মত উচ্চস্তরের শক্তি উৎপাদক তৈরিতেও অক্ষম ছিল। তাই কালের নিয়মে তাদের সংখ্যা কমে যায়। তবে এখনও কিছু সাগরে এদের দেখা পাওয়া যায়।













