World

সমুদ্রের নোনা জল দিয়েও চাষ, খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে বিপ্লব ঘটালেন বিজ্ঞানীরা

ধান চাষের জন্যে সাধারণত মিষ্টি জল আর নদী সংলগ্ন উর্বর পলিমাটি লাগে। সমুদ্রের নোনা জলে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায় বলে সাগর পারের জমিতে চাষ করা অসম্ভব।

সমুদ্রের জলকে সেচের কাজে লাগানো অসম্ভব বলে ভাবা হলেও তাকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন একদল বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন বিশেষ ধরনের ধানের বীজ ব্যবহার করতে পারলে উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত মাটিতেও ধান চাষ করা যায়।

এমনকি তার ফলনও বৃদ্ধি পায়। এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছেন তার ফলে খাদ্য সুরক্ষাকে আরও নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বের সকলেই এতদিন জানতেন সমুদ্রের উপকূলে নোনা জলে কোনও চাষই করা যায়না। বাদাম জাতীয় কয়েকটি তৈলবীজের চাষ হলেও ধানের মত কোনও শস্য চাষ সম্ভব ছিলনা। চিনের একদল বিজ্ঞানী সমুদ্রের নোনা জলেও ধান চাষ করলেন।

এই বিশেষ ধরনের ধানটি সি ওয়াটার রাইস নামে পরিচিত। ধান চাষের জন্যে নির্দিষ্ট জলবায়ু, সঠিক জলের ব্যবস্থা, সার এবং যথেষ্ট পরিমাণে চাষযোগ্য জমির দরকার পড়ে। এতগুলি শর্ত থাকে বলেই ধান কখনওই যেকোনও জায়গায় জন্মাতে পারেনা।

উপযুক্ত পরিমাণ বৃষ্টি এবং সঠিক মাটি ধান চাষের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় শর্ত। অথচ চিনের বিজ্ঞানীরা উপযুক্ত পরিবেশের বাইরে গিয়েও নোনা জলে ধান চাষ করেছেন।

২০২৪ সালের মধ্যে ৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে এই সি ওয়াটার রাইস চাষ করা সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০৩০-এর মধ্যে এই বিশেষ ধরনের ধান প্রায় ২০০ কোটি মানুষের খাদ্যাভাব মেটাতে সক্ষম হবে।

যুগান্তকারী এই আবিষ্কার শুধুই যে কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের একটি নতুন ধাপ তাই নয়, বরং এই আবিষ্কারের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে যাওয়া এবং এরফলে চাষ জমির পরিমাণ কমে যাওয়ার মত সমস্যার চিরতরে সমাধান হবে‌ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *