সমুদ্রের গভীরে এই পুরুষ মাছ কামড়ে ধরে স্ত্রী মাছকে, তারপর শুরু হল উদ্দামতা
সমুদ্রের অতলে রোজ কতকিছুই তো ঘটে চলেছে। তার কতটুকুই বা মানুষ জানতে পারে। যেমন এই জলজ প্রাণ সঙ্গিনীর সঙ্গে ভয়ংকর কাণ্ড ঘটায়।

মাছদের সচরাচর শান্ত প্রাণি হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। কিন্তু মৎস্য জগতেও এমন কিছু মাছ আছে যাদের মধ্যে কেউ অত্যন্ত হিংস্র আবার কেউ বা মাংসাশী। তবে মিলনকালেও কোনও মাছ যে অভিনব পন্থা গ্রহণ করতে পারে সেটাই বিজ্ঞানীদের খুব অবাক করেছে। সম্প্রতি এমনই এক অভিনব মৎস্য জীবনের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
মাছটির নাম কাইমেরা। এদের ব়্যাট ফিশ বা ঘোস্ট শার্কও বলা হয়। এদের কপালে বিশেষ এক ধরনের দাঁত থাকে। আসলে দাঁতটি এদের ২ চোখের উপর ঠিক মাঝ বরাবর অবস্থিত একটি লম্বাটে মাংসপিণ্ড। এর নাম টেন্টাকুলাম। আর এই টেন্টাকুলামের চারপাশে থাকে একাধিক দাঁত। একেই তারা মিলনের সময় এক অদ্ভুত কাজে ব্যবহার করে থাকে।
সঙ্গমের সময় পুরুষ কাইমেরা এই বিশেষ অঙ্গ দিয়ে স্ত্রী কাইমেরার বক্ষপাখনাকে কামড়ে ধরে রাখে। যেন স্ত্রী মাছটি মিলনকালের মাঝে চলে না যেতে পারে। অতগুলি অতিরিক্ত দাঁত থাকায় পুরুষদের পক্ষে কাজটি আরও সহজ হয়।
তবে বিজ্ঞানীদের কাছে এই কাইমেরা কখনওই নতুন কোনও প্রজাতি নয়। দৈর্ঘ্যেও এরা খুব বেশি বড় হয়না। মোটামুটি ১০ ইঞ্চির মত হয়। কাইমেরার শরীরে কোনও আঁশ নেই। কিন্তু তাদের শারীরিক গঠন যে অনেকটাই অদ্ভুত, বিজ্ঞানীরাও তা মেনে নিয়েছেন।
কাইমেরা আসলে হাঙর গোষ্ঠীরই অন্তর্ভুক্ত। হাঙরের চোয়ালে যে ধরনের দাঁত থাকে এদের কপালেও ওই একই দাঁত দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় ৪০ কোটি বছর আগে এই ২ প্রজাতি একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান। তবে এখন আর কাইমেরা এবং হাঙরের মধ্যে ওই একটি দাঁত ছাড়া আর কোনকিছুতেই মিল অবশিষ্ট নেই।
প্রসিডিংস অফ দ্যা ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস জার্নালে সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এই কাইমেরার মাথায় কিভাবে এমন ভয়ানক দাঁত গজায় সেই নিয়েও এই গবেষণায় আলোকপাত করা হয়েছে। মাইক্রো সিটি স্ক্যান পদ্ধতি ব্যবহার করে এদের মিলনের বিষয়ে যে অদ্ভুত তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা বিজ্ঞানীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।