মাংসাশী হয়ে গেল কাঠবিড়ালিরা, চিন্তার ভাঁজ বিজ্ঞানীদের কপালে
প্রতিটা প্রাণির খাদ্যাভ্যাস একে অপরের থেকে আলাদা। পরিবেশ এবং খাবারের সহজলভ্যতার উপর নির্ভর করেই সকলের খাদ্যাভ্যাস তৈরি হয়। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তনে তাতেও আসতে পারে ভয়ংকর বদল।

এক অদ্ভুত পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছেন প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী একটি অঞ্চলের মানুষজন। এমন এক বদল দেখলেন যেখানে বেঁচে থাকার দায়ে কোনও প্রাণি নিজের জিভের স্বাদই বদলে ফেলেছে।
পশ্চিম আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় যে কাঠবিড়ালিরা থাকে তারা পৃথিবীর বাকি আর পাঁচটা দেশের কাঠবিড়ালিদের মতই তৃণভোজী বলে পরিচিত। অন্তত এতদিন ধরে সেটাই হয়ে আসছিল।
হঠাৎই দেখা যাচ্ছে এরা নিজেদের চিরাচরিত খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলেছে। উদ্ভিজ্জ খাদ্যের পরিবর্তে তারা ছোট ছোট প্রাণি শিকার করে খাচ্ছে। মূলত বাদাম, গাছের বীজ এবং নানারকম ঘাসপাতা খেয়ে পেট ভরানো প্রাণির এমন আমূল পরিবর্তন দেখে সবাই চমকে গেছেন।
নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে একধরনের কাঠবিড়ালি বিভিন্ন প্রাণি ধরে নিজেদের খিদে মেটাচ্ছে। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় একধরনের ইঁদুর জাতীয় প্রজাতি বাস করে। বিজ্ঞানীরা একটি নির্দিষ্ট জায়গা বেছে পরীক্ষা করে দেখেছেন, গত কয়েক দশকের তুলনায় ওই প্রাণিটির সংখ্যা পরিমাণে অনেকটাই বেড়ে গেছে।
কাঠবিড়ালিদের সঙ্গে ওই ভোল প্রজাতির ইঁদুরদের সম্পর্ক ভাল করে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে উভয়ের মধ্যে ৪২ শতাংশ লড়াইয়ের মূল কারণ কাঠবিড়ালির থেকে ইঁদুরদের বাঁচার চেষ্টা।
সেখানে গাছপালার পরিমাণ এখন লক্ষণীয়ভাবে কমে গেছে। এই কারণে কাঠবিড়ালির এই প্রজাতিটি সক্রিয়ভাবে শিকারে মন দিয়েছে। জীবনধারণের চাহিদা তাদের তৃণভোজী থেকে মাংসাশীতে পরিণত হতে বাধ্য করেছে।
উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক জেনিফার স্মিথের মতে, মানবসমাজের অবিবেচক কাজকর্মের কারণে সারা বিশ্বে ব্যাপক জলবায়ুগত পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। ফলে খরা থেকে বন্যা সবকিছুই প্রাণিদের সাধারণ জীবনধারণে বদল এনেছে। তাদের খাবারের খোঁজেও অসামান্য পরিবর্তন ঘটেছে। এর থেকে প্রমাণ হয় পরিবর্তিত পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্যে যেকোনও প্রজাতি নিজেদের খাদ্যাভ্যাস থেকে জীবনযাপন সবেতেই বদল আনতে বাধ্য হয়।