ঘূর্ণিঝড় থামানোর উপায় বার করলেন বিজ্ঞানীরা, সহজেই রুখে দেবে তাণ্ডবলীলা
প্রকৃতি যখন তার তাণ্ডবনৃত্য শুরু করে তখন মানুষ অসহায়ের মত তার শিকার হয়। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের মত ভয়ংকর তাণ্ডবও সহজে থামিয়ে দেওয়ার উপায় বার করলেন বিজ্ঞানীরা।

প্রকৃতি কারও ইচ্ছা অনিচ্ছার ধার ধারে না। সে যখন যেভাবে তার রূপ দেখাতে চায় তাই দেখায়। তার জেরে জীবনহানি থেকে সম্পদ নষ্ট, কিছুই থেমে থাকেনা। সে ধ্বংসলীলা বড়ই নিষ্ঠুর হয়। যেমন ঘূর্ণিঝড়।
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তেই এমন সব ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় যা বহু ক্ষতির কারণ হয়। মানুষ থেকে অন্যান্য পশুপাখি, গাছপালা থেকে বাড়িঘর, সব শেষ করতে করতে সে ছুটে চলে তার তাণ্ডব নৃত্য করতে করতে।
সমুদ্রে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে এর পূর্বাভাস তো বিজ্ঞানীরা দিয়ে দেন। কিন্তু তাকে রোখার কোনও উপায় এখনও তৈরি হয়নি। দিনের পর দিন সে শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসে স্থলভাগের দিকে।
এই ঘূর্ণিঝড়কে আটকে দিতে পারলে কিন্তু অনেক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। সেই পথই এবার খুলে ফেলেছেন বলে দাবি করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-র গবেষকেরা।
কীভাবে ঘূর্ণিঝড়কে রোখার কথা ভাবছেন তাঁরা? গবেষকেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা ঘূর্ণিঝড়কে রুখে দেওয়ার জন্য কাজে লাগাচ্ছেন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যাওয়া ক্ষুদ্র কণাকে। এই ক্ষুদ্র কণাগুলি আবার বিভিন্ন আকারের হতে হবে।
অবশ্যই সব কণাই হবে আণুবীক্ষণিক। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, যখনই জানা যাবে সে সমুদ্রের ওপর কোনও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে তখন তার প্রাথমিক পর্যায়ে এই কণাগুলিকে যদি তৈরি হতে থাকা ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া যায়, তাহলে সেগুলি প্রথমে ঝড়কে আরও শক্তিশালী করলেও আখেরে সেটিকে দুর্বল করে দেবে।
এটি যে একটি জটিল পদার্থবিদ্যা তাও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কীভাবে মেঘ তৈরি হচ্ছে, কীভাবে তার ওপর ক্ষুদ্র কণা প্রভাব ফেলছে, কীভাবে উত্তাপ নির্গত হচ্ছে, এসবই এক একটি শর্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়কে ধ্বংসাত্মক আকার নিতে আটকে দেবে। তাকে দুর্বল করবে।
এখন প্রশ্ন হল এই ক্ষুদ্র কণাগুলিকে তৈরির প্রাথমিক স্তরে থাকা ঘূর্ণিঝড়ে প্রবেশ করানো হবে কীভাবে? এজন্য অনেক বিমানের দরকার বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। যে বিমান এই ক্ষুদ্র কণাগুলিকে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রবেশ করাবে ঘূর্ণিঝড়টির কাছে গিয়ে।
এই পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে আগামী দিনে কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে তৈরি হওয়া ভয়ংকর সব ঘূর্ণিঝড়কে অনেকটাই রুখে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞেরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা