State

গায়ে পোড়া দাগ কেন? নববধূকে প্রকাশ্যে ‘অর্ধনগ্ন করে মার’!

Published by
News Desk

হাতে নগদ প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। গায়ে ২ ভরি সোনার গয়না। এটুকু সম্বল করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে স্বামীগৃহে সংসার করতে হাজির হয়েছিলেন বছর ২৪-এর এক গৃহবধূ। কিন্তু তার পরিণতি যে এমন ভয়ংকর হবে তা তাঁর জানা ছিলনা। অভিযোগ ওই নববধূর মুখে কালো পোড়ার দাগ থাকায় শ্বশুরবাড়ির দোরগোড়ায় তাঁর পথ আটকান বাড়ির লোকজন। এমন দাগ থাকা মেয়েকে তাঁরা কিছুতেই বাড়িতে জায়গা দেবেন না বলে জানিয়েও দেন। এখানেই শেষ নয়, দেহের আর কোথায় কোথায় দাগ রয়েছে তা দেখার নাম করে বাড়ির সামনে প্রকাশ্যে ওই নববধূর পোশাক খুলে তাঁকে অর্ধনগ্ন করে ফেলে স্বামী অমিত দাসের বাড়ির লোকজন। নিজেরাই নয়, দেহের অন্যান্য অংশে পোড়ার দাগ দেখাতে প্রতিবেশিদেরও ডেকে আনা হয়। তারপর সকলের সামনে ওই অর্ধনগ্ন গৃহবধূর দেহের দাগ এক এক করে দেখানো হয়। চলে মারধরও। এ লজ্জা সহ্য হয়নি ওই যুবতীর। রাস্তার ওপরই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান তিনি। পরে খবর পেয়ে তাঁর বাড়ির লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পুলিশের কাছে শ্বশুরবাড়ির এহেন কাজের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন।

পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার চুরপুলি গ্রামের এই ঘটনায় রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত মোবাইল ফোনে আলাপ থেকে। প্রায় ২ মাস মোবাইলেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ার পর গত ২ জুলাই দুজনের প্রথম দেখা হয় যুবতী যে গ্রামের বাসিন্দা সেই সিংগি গ্রামে। ওদিনই প্রথম দেখায় দাগ নিয়ে প্রশ্ন করে অমিত। যুবতী জানান ছোটবেলায় প্রদীপ উল্টে আগুন ছড়ায়। তাতেই তাঁর দেহে কিছু পোড়া দাগ হয়ে যায়। সব জেনেও অমিত তাঁকে বিয়ে করতে রাজি হয়। ওদিনই স্থানীয় একটি মন্দিরে বিয়েও হয় দুজনের। পরদিন অমিত মায়ের অসুস্থতার কথা জানিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। তারপর থেকে তার আর কোনও খোঁজ ছিলনা। অগত্যা বিয়ে করার পর স্বামীর ঘরে সংসার করার ইচ্ছে বুকে করে ওই যুবতী নিজেই এদিন হাজির হন চুরপুলি গ্রামে। কিন্তু শ্বশুরঘরের চৌকাঠ তো পার করা হলই না, বরং সম্ভ্রমহানির প্রবল লজ্জা নিয়ে আপাতত মানসিক দিক দিয়ে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছেন ওই নববধূ। হাসপাতালে এখনও একটা ট্রমার আবহে রয়েছেন তিনি। এদিকে ওই যুবতীর শ্বশুরবাড়ির ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলেও তারা এখনও অধরা।

Share
Published by
News Desk

Recent Posts