State

পেটের দায়ে মাছ ধরতে গিয়ে সুন্দরবনে বাঘের পেটে পরিযায়ী শ্রমিক

কাজ নেই। হাতে টাকা নেই। তাই পেটের দায়ে গিয়েছিলেন সুন্দরবনে মাছ ধরতে। সেখানেই বাঘের পেটে যেতে হল এক পরিযায়ী শ্রমিককে।

Published by
News Desk

কলকাতা : কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। তিনি যে কাজে দক্ষ সে কাজ আর নেই। ভিন রাজ্য থেকে বহু শ্রমিক এখন ফিরে এসেছেন নিজ গৃহে। সেখানেই রাত দিন কাটছে তাঁদের। কর্মহীন অবস্থায়। এই অবস্থা থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে অনেকেই অন্য কোনও কাজকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করছেন। হয়তো সব স্বাভাবিক হলে তাঁরা ফিরবেন নিজেদের কাজে। কিন্তু তার আগে রোজগারটুকু বাঁচিয়ে রেখে পেট চালানোর জন্য তাঁরা বেছে নিচ্ছেন অন্য কোনও কাজ। কিন্তু সেই কাজে দক্ষতার অভাবে অনেক সময় নেমে আসছে ভয়ংকর পরিস্থিতি। যেমনটা হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক প্রশান্ত মণ্ডলের জীবনে।

প্রশান্ত মণ্ডল সহ তাঁর গ্রামেরই বেশ কয়েকজন ছিলেন দক্ষিণ ভারতের একটি নির্মাণক্ষেত্রে কর্মরত। দীর্ঘদিন তাঁরা নির্মাণক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা ফিরেছিলেন নিজেদের গ্রামে। হাতে কাজ নেই। পকেটে পয়সা নেই। পরিবারের ক্রমশ পেটের টান প্রকট হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় কিছু রোজগারের আশায় তাঁরা স্থির করেন সুন্দরবনের জঙ্গলে ঢুকে সেখানকার অগুন্তি খাঁড়ি থেকে মাছ ও কাঁকড়া ধরবেন। যা বাজারে বেচতে পারলে কিছু অর্থের মুখ দেখতে পাবেন তাঁরা।

সেইমত তাঁরা সুন্দরবনের জঙ্গলে একটি নৌকা নিয়ে ঢুকে পড়েন। হয়তো অভিজ্ঞতার অভাবে তাঁরা বুঝতে পারেননি ঠিক কতটা ঢোকা উচিত হবে। কতটা নয়। না বুঝেই প্রায় কোর এলাকায় পৌঁছে যান তাঁরা। সেখানে নৌকা জলের ধারে করে কাঁকড়া ধরতে গেলে তাঁদের ওপর আচমকাই ঝাঁপিয়ে পড়ে এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। অন্যরা নৌকা ফেলে ছুটে বাঘের হাত থেকে পালাতে পারলেও প্রশান্ত পারেননি। তাঁকে বাঘ টেনে নিয়ে যায় জঙ্গলের মধ্যে।

পরে প্রশান্তর খোঁজ করতে এসে তাঁর দেহাংশ উদ্ধার হয় ঘটনাস্থল থেকে আরও ৪ কিলোমিটার জঙ্গলের মধ্যে থেকে। দেহ ছিল খোবলানো অবস্থায়। মুণ্ড ছিলনা। সেটি পাওয়াও যায়নি। এটা কিন্তু নতুন নয়। এই নিয়ে গত ৩ মাসে ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক সুন্দরবনে বাঘের পেটে গেলেন। এর একটাই কারণ। এঁদের সুন্দরবনের মধ্যে ঢুকে মাছ ধরা বা মধু সংগ্রহে অনভিজ্ঞতা।

Share
Published by
News Desk