State

৭ দিন পর জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের কিনারা করল পুলিশ

Published by
News Desk

জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের কিনারা করল পুলিশ। গত ৭ দিন ধরে বারবার প্রশ্ন উঠেছে জিয়াগঞ্জের খুনিকে কেন পুলিশ ধরতে পারছেনা? খুনের সঙ্গে মিশেছিল রাজনীতির রং। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে শিক্ষক, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ও ছোট্ট পুত্রের খুনের কিনারার কথা জানালেন জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার। এই খুনের ঘটনায় উৎপল বেহেরা নামে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পেশায় রাজমিস্ত্রি উৎপল খুনের কথা স্বীকার করেছে বলেও জানিয়েছে তারা।

শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল ও তাঁর পরিবারকে খুনের পিছনে কারণটা কি? পুলিশ জানাচ্ছে, শিক্ষকতার পাশাপাশি বন্ধুপ্রকাশ বেশ কিছু অর্থ লগ্নি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অনেককে বুঝিয়ে সেসব লগ্নি সংস্থায় বিনিয়োগও করান। তেমনভাবেই তিনি উৎপল বেহেরাকেও বোঝান। উৎপল রাজি হয়। ২টি পলিসি করে উৎপল। ২টিই ২৪ হাজার টাকার। কিছুদিন আগে সে প্রিমিয়ামের ৪৮ হাজার টাকা বন্ধুপ্রকাশকে দেয়। তার একটি পলিসির ২৪ হাজার টাকা তাকে বন্ধুপ্রকাশ দিলেও অন্য ২৪ হাজারের পলিসির কোনও প্রিমিয়াম জমার রসিদে তিনি দিচ্ছিলেন না। এই নিয়ে ২ জনের মধ্যে মনোমালিন্য চরমে উঠেছিল। এই নিয়ে ক্রমশ দুজনের মধ্যে ঝগড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

পুজোর আগে উৎপল বেহেরা তার টাকা ফেরত চাই বলে জানালে তাকে গালিগালাজ করেন বন্ধুপ্রকাশ। এরপর থেকেই বন্ধুপ্রকাশের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার কথা ভাবছিল উৎপল। সেইমত বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে একটি ধারাল অস্ত্র নিয়ে সে বন্ধুপ্রকাশের বাড়ি পৌছয়। তার কড়া নাড়ার শব্দে বন্ধুপ্রকাশই দরজা খোলেন। তখনই তাঁকে ধারালো অস্ত্রের কোপে হত্যা করে উৎপল। তারপর দোতলায় উঠে বন্ধুপ্রকাশের স্ত্রী বিউটি ও ৮ বছরের ছেলেকে হত্যা করে। পুরো হত্যাকাণ্ড দুপুর ১২টা ৬ মিনিট থেকে ১২টা ১১ মিনিটের মধ্যে শেষে করে সে। মাত্র ৫ মিনিট নেয় ৩টি খুন করতে। লক্ষ্য ছিল বন্ধুপ্রকাশ। তবে উৎপল বেহেরা যদি শুধু বন্ধুপ্রকাশকে খুন করে চলে যেত তাহলে বন্ধুপ্রকাশের স্ত্রী বা পুত্র তার নাম বলে দিতে পারতেন। কারণ উৎপলকে সকলেই চিনতেন। তাই ঝুঁকি না নিয়ে পুরো পরিবারকেই হত্যা করে সে। কিন্তু পালানোর সময় স্থানীয় এক দুধওয়ালা তাকে দেখে ফেলেন। সেই দুধওয়ালাকে ধাক্কা মেরেই সেখান থেকে চম্পট দেয় উৎপল।

তদন্তে নেমে উৎপল বেহেরার নামে থাকা রক্তে মাখা লগ্নির কাগজ, শেষ কার সঙ্গে বন্ধুপ্রকাশ কথা বলেন তার রেকর্ড সহ বেশ কিছু প্রমাণ উৎপলকে পাকড়াও করতে কাজে আসে পুলিশের। উৎপল বেহেরা ধরা পড়ার পর এটা পরিস্কার হল যে প্রতিশোধ নিতেই খুন। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ আপাত দৃষ্টিতে নেই। এদিকে উৎপল খুন করে তার বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তাই তার বোনকেও আটক করেছে পুলিশ।

Share
Published by
News Desk

Recent Posts