Feature

একটি সাধারণ জাহাজ বদলে দিয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাস

জীবন যে কখন কিভাবে বদলে যাবে তা আগে থেকে বোঝা যায়না। ঠিক যেভাবে বোঝা যায়নি ইতিহাস বদলে দেওয়া একটি মামুলি জাহাজের গুরুত্ব।

একসময় কিছু মানুষ ধর্মীয় একাধিপত্য সহ্য করতে না পেরে হাঁপিয়ে ওঠেন। আবেগ তাড়িত হয়ে শুধুমাত্র জীবন বদলানোর আশায় জলে নামেন তাঁরা। বাহন হিসাবে ছিল কাঠের তৈরি একটা সাধারণ জাহাজ।

১৬২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর। ইংল্যান্ড থেকে ১০২ জন যাত্রী এবং ৩০ জন নাবিককে সঙ্গে নিয়ে আটলান্টিকের দীর্ঘ পথে পাড়ি দেয় সেই ছোট্ট জাহাজ। দেশ ছাড়ার সেই মুহুর্তে কারওরই খেয়াল হয়নি সামনে তাঁদের জন্য কত বড় বিপদ অপেক্ষা করে আছে।

জাহাজটির নাম মে ফ্লাওয়ার। যা দেখতে সাধারণ হলেও সেদিন আমেরিকার ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। এই জাহাজের যাত্রীরাই সেদিন সামুদ্রিক ঝড় ঝঞ্ঝার ভয়কে তুচ্ছ করে কেবল নিজেদের মত করে বাঁচার আশায় এবং স্বতন্ত্র ধর্ম বিশ্বাসের চিন্তায় দেশত্যাগ করেছিলেন।

যাত্রাপথ মসৃণ ছিলনা। ছোট্ট ওই জাহাজে আবহাওয়ার দুরবস্থাকে সঙ্গী করে মাসের পর মাস ধরে মহাসমুদ্রে ভেসে থাকা কোনও পরীক্ষার চেয়ে কম ছিলনা। যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেকে প্রাণও হারান। ঝোড়ো হাওয়ার প্রবল দাপট সইতে না পেরে মে ফ্লাওয়ার-এর অভিমুখ বদলে যায়।

ভার্জিনিয়ার বদলে জাহাজটি গিয়ে উপস্থিত হয় আজকের প্লাইমাউথ ক্ষেত্রে। শুরু হয় এক নতুন যুদ্ধ। তীরে নামার আগেই যাত্রীরা নিজেদের সম্মতিতে মে ফ্লাওয়ার কম্প্যাক্ট নামে একটি চুক্তি করেন। যা পরবর্তীকালে আমেরিকার প্রাণ ভোমরায় পরিণত হয়। যদিও প্রাথমিকভাবে প্লাইমাউথে জীবনযাত্রা খুবই কঠিন ছিল।

প্রবল ঠান্ডা এবং খাদ্যাভাবে অনেকের প্রাণ যায়। তবে যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় কৃষিকাজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করতে শেখেন। এই সংঘর্ষ এবং সহযোগিতার কাহিনিই আগামী দিনে থ্যাংকস গিভিং-এর জন্ম দেয়। মে ফ্লাওয়ার কোনও যুদ্ধ জাহাজ ছিলনা। কিন্তু সাধারণ ওই জাহাজই কিছু মানুষকে ভবিষ্যতের রাস্তা দেখানোর প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *