টি ব্যাগ, প্রতীকী ছবি
থার্মোপ্লাস্টিকে ভরা চা পাতা। যাকে পরিভাষায় বলা হয় টি ব্যাগ। সেই টি ব্যাগ গরম জলে চোবালেই ক্রমশ জলের রং বদলায়। চায়ের লিকার ক্রমশ গাঢ় হতে থাকে। যত সেই সুতোয় ঝোলানো টি ব্যাগ বা চায়ের ব্যাগ কাপের গরম জলে চোবানো হতে থাকে ততই লিকার গাঢ় হয়।
এবার যাঁর যেমন লিকার পছন্দ ততটা গাঢ় করে নিলেই চা মোটামুটি তৈরি। তাতে চাইলে দুধ, চিনি দিয়ে চা বানানো যায়। অথবা লিকারই পান করা যায়।
চা পানকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে টি ব্যাগ। কিন্তু সেই টি ব্যাগ কোনওদিনই পরিকল্পনা করে তৈরি হয়নি। বরং তা তৈরি হয়েছিল দুর্ঘটনাবশত।
১৯০৮ সালে নিউ ইয়র্ক শহরের এক চা বিক্রেতার কাছে বেশ কিছু ভাল চা পাতা পৌঁছয়। সেগুলি তাঁর গ্রাহকরা কতটা পছন্দ করবেন তা যাচাই করতে তিনি সুদৃশ্য সিল্কের ছোট ছোট পুটুলিতে সেই চা পাতার নমুনা ভরে তাঁদের কাছে পাঠান। জানান পান করে তাঁকে জানাতে কেমন লাগল।
এক গ্রাহক সেটি পাওয়ার পর মনে করেন ওই সিল্কের ছোট পুটুলি হয়তো চা ছাঁকার জন্য দেওয়া হয়েছে। তাই তিনি চা পাতা সমেত ওই সিল্কের পুটুলি গরম জলে চুবিয়ে দেন। তা থেকে দারুণ লিকারও বার হয়। তাঁর খেয়ে পছন্দও হয়।
সেই গ্রাহক সেকথা ওই বিক্রেতাকে জানান। বিক্রেতাও বেজায় খুশি হন। কিন্তু তারপর যখন জানতে পারেন যে সিল্কের যে সুদৃশ্য পুটুলি করে তিনি চা পাতার নমুনা পাঠিয়েছিলেন সেটি সমেতই গরম জলে চোবানো হয়েছে এবং তা সত্ত্বেও চা সম্বন্ধে তারিফই এসেছে, তখন তাঁর মাথায় অন্য এক বুদ্ধি খেলে যায়।
থমাস সুলিভান নামে ওই বিক্রেতার মনে হয় এভাবেও তো তাহলে চা পাতা বেচা যেতে পারে। এরপর তাঁর হাত ধরেই তৈরি হয় টি ব্যাগ। যা গ্রাহকদের পছন্দও হয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টি ব্যাগের কাগজের মোড়কে এসেছে পরিবর্তন। এখন তাও বদলে এসেছে গরম সহ্য করতে পারা এক ধরনের থার্মোপ্লাস্টিক। যাকে বলা হয় পলিপ্রপাইলিন। তার মধ্যে থাকে চা পাতা। ওপরে থাকে ঝোলানোর জন্য একটি সুতো।