জীবন বাঁচিয়ে নায়ক, ছবি – সৌজন্যে – এয়ার-জারম্যাট ডট সিএইচ
তিনি হিমবাহের খোঁজে হাজির হয়েছিলেন সেখানে। পাহাড়ি জায়গায় হেঁটে ঘুরে বেড়ানো তাঁর নেশা। সেই পাহাড়ি জায়গার মধ্যে হিমবাহের আশপাশের এলাকাও রয়েছে। তিনি সুইস অ্যালপাইন এলাকার একটি হিমবাহের কাছে পৌঁছে যান।
যেখানে চারধারে যতদূর দেখা যায় শুধু বরফ আর বরফ। যেন বরফের অসীম সমুদ্র। সেই হিমবাহের একটি জায়গায় বরফ জমাট বেঁধেই তৈরি হয়েছিল একটা সেতুর মতন। যার ওপর দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি।
আর ঠিক তখনই হয়তো তাঁর ভার সহ্য করতে না পেরে সেই বরফের সেতু ভেঙে পড়ে হিমবাহের একটি গভীর ফাটলে। ওই ব্যক্তিও হারিয়ে যান সেই ফাটলের খাঁজে তৈরি হওয়া বরফের একটি গুহার মত অংশে। তাঁর কাছে একটি ওয়াকিটকি ছিল। যা দিয়ে তিনি কাছাকাছি থাকা একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁকে রক্ষার করতে বলেন।
দ্রুত উদ্ধারকারী দলের কাছে খবর যায়। একটি হেলিকপ্টার নিয়ে সেই অতি দুর্গম হিমবাহের আশপাশে আকাশ থেকে খোঁজ শুরু হয় ওই ব্যক্তির। কিন্তু সেই বরফের সমুদ্রের কোন গর্তে তিনি রয়েছেন তার খোঁজ পাওয়া যায়না।
প্রায় হাল ছেড়ে দেওয়ার মত অবস্থা হয় উদ্ধারকারীদের। তবে একটি সারমেয় হাল ছাড়েনি। চিহুয়াহুয়া প্রজাতির সেই লোমশ সারমেয়টি ওই ব্যক্তির হদিশ পেতে ওই হিমবাহের বরফের মধ্যেই খোঁজ চালাতে থাকে। তার সেই খোঁজ বিফলে যায়নি।
জীবন বাজি রেখে ওই বরফের মধ্যে সে একাই খুঁজে দেয় ওই ব্যক্তিকে। জীবনের বাজি কারণ ওই বরফের চাদরের অনেক জায়গায় বরফে ঢাকা গর্ত থাকে। যেখানে পা পড়লে বরফের মধ্যে তলিয়ে যাওয়া নিশ্চিত।
সেসব তোয়াক্কা না করে সারমেয়টি একটি পাথরের ওপর উঠে একটি গর্ত খুঁজে দৃষ্টি আকর্ষণ করে উদ্ধারকারীদের। অবশেষে ওই ব্যক্তিকে একটি বরফের গর্তের মত গুহা থেকে উদ্ধার করা হয়। বরফের অন্ধকার গর্ত থেকে বার করে আনা হয় ওই ব্যক্তিকে।
তারপর ওই ব্যক্তি ও পোষ্য ২ জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। ওই চিহুয়াহুয়া প্রজাতির কুকুরটি এখন বাস্তবেই সুপারহিরোর মর্যাদা পাচ্ছে সকলের কাছে। কারণ সে না থাকলে হয়তো ওই ব্যক্তির কোনও খোঁজই পাওয়া যেত না।