National

এই রহস্যঘেরা মন্দিরে পিণ্ডদান এবং তর্পণের সঙ্গে জুড়ে আছে শ্রীরামচন্দ্রের কাহিনি

ভারতীয় সংস্কৃতিতে তর্পণকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। এ কাহিনি জড়িয়ে আছে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের সঙ্গে। তাঁর পিতার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে এই বিশেষ মন্দির।

পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে শ্রীরামচন্দ্র যখন তাঁর পিতা দশরথের শ্রাদ্ধের কাজ করছিলেন তখন তাঁর বানানো চালের পিণ্ডগুলি বারবার পোকায় পরিণত হয়ে যাচ্ছিল। এই অদ্ভুত ঘটনা থেকে মুক্তি পেতে শ্রীরাম মহাদেবের কাছে প্রার্থনা জানান।

তখন মহাদেব রামচন্দ্রকে দক্ষিণ ভারতের তিলতর্পণপুরীর আদি বিনায়ক মন্দিরে গিয়ে পুজো করার নির্দেশ দেন। মহাদেবের আদেশ মেনে রামচন্দ্র ওই মন্দিরে গিয়ে পুজো করার সাথে সাথেই ওই ৪টি চালের পিণ্ড ৪টি শিবলিঙ্গে পরিণত হয়। এখন ওই শিবলিঙ্গগুলি পাশেই অবস্থিত মুক্তেশ্বর মন্দিরে রাখা আছে।

এই কারণে গোটা দেশের মধ্যে একমাত্র এখানেই আজও মন্দিরের ভিতর পিতৃপুরুষের শান্তি স্বস্ত্যয়ন করা হয়। ভক্তরা মনে করেন এখানে পিতৃপুরুষের কাজ করলে তাঁরা মোক্ষলাভ করেন।

পরিবারের ওপর থেকে পিতৃদোষও কেটে যায়। মন্দিরটি তামিলনাড়ুর তিরুবারুর জেলায় অবস্থিত। তিল এবং তর্পণ এই ২ শব্দযোগে এর নাম হয়েছে তিলতর্পণপুরী। জায়গাটি তামিলনাড়ুর কুটনুর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

ভারতীয় সংস্কৃতিতে মহালয়ার দিন অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে জলদানের রীতিকে বলা হয় তর্পণ। তামিলনাড়ুর যে মন্দিরে শ্রীরামচন্দ্র তাঁর পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তির জন্যে পূজা অর্চনা করেছিলেন সেই আদি বিনায়ক মন্দির দেশের গুটিকয়েক মন্দিরের একটি যেখানে ভগবান গণেশের রূপ মানুষের মুখের আদলে তৈরি।

মনে করা হয় মন্দিরটি সপ্তম শতাব্দীতে তৈরি। কথিত আছে দেবী পার্বতী নিজে গণেশের এই রূপ তৈরি করেন। গণেশের এই অদ্বিতীয় রূপ দর্শনের জন্য প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে। এই রূপকে গণেশের প্রাথমিক রূপ বলেও মনে করা হয়।

প্রসঙ্গত পিতৃপুরুষের কাজের জন্য দক্ষিণ ভারতের আরও একটি বিখ্যাত স্থান কাঞ্চিপুরম। যাকে দক্ষিণের কাশী বলা হয়। একাদশী এবং অমাবস্যায় সেখানে তর্পণ ও পিণ্ডদানের আয়োজন করা হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *