প্রতি সেকেন্ডে খাচ্ছে ৬০০ কোটি টন খাবার, মহাকাশে একাই ঘুরছে এই ক্ষুধার্ত দানব গ্রহ
ব্রহ্মাণ্ডে অসংখ্য একাকী গ্রহ রয়েছে। কোনও নক্ষত্রমণ্ডল থেকে ছিটকে গেলে বা কখনও যথেষ্ট পরিমাণে ভর সংগ্রহ করতে না পারলে এরা একা হয়ে যায়।

পৃথিবী থেকে প্রায় ৬২০ আলোকবর্ষ দূরে একটি গ্রহ অবস্থান করছে। এর বয়স মোটামুটি ১০ থেকে ২০ লক্ষ বছরের মধ্যে। আপাতদৃষ্টিতে বয়সের সংখ্যাটিকে অনেকটা বেশি মনে হয়। কিন্তু আসলে এটি এখনও নবীন গ্রহ।
ব্রহ্মাণ্ডে বিচ্ছিন্নভাবে ঘুরে বেড়ানো গ্রহগুলির মধ্যে এটিও একটি। কিন্তু অন্যান্য নিঃসঙ্গ গ্রহগুলির তুলনায় এর বৈশিষ্ট্য অনেকটাই আলাদা। খুব দ্রুত গতিতে এর ভর বৃদ্ধি পায়। বিজ্ঞানীরা নক্ষত্রের ভর বৃদ্ধির সঙ্গে এর অনেক মিল খুঁজে পেয়েছেন।
গ্রহটির নাম চা ১১০৭-৭৬২৬। সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন এই গ্রহটির ভর বৃহস্পতির ভরের চেয়েও অন্তত ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি। প্রতিদিন এর ভর অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়েই চলেছে।
এই ভর বৃদ্ধির পিছনে রাসায়নিক বলয় এবং চৌম্বকক্ষেত্রের যোগ আছে বলে বিজ্ঞানীদের মত। বিজ্ঞানীরা হিসাবে করে দেখেছেন প্রতি সেকেন্ডে ৬০০ কোটি টন করে গ্যাস আর ধূলিকণা খাচ্ছে এই নবীন গ্রহটি।
সম্প্রতি দ্যা অ্যাস্ট্রোফিজিক্স জার্নাল লেটারস-এ এই বিষয়ে নতুন গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গ্রহটির সন্ধান পাওয়া যায় ২০০৮ সালে। খোঁজ পাওয়ার পর থেকেই এর উপর নজর রাখা হচ্ছিল। তা থেকেই জানা যায় গত কয়েক মাসে গ্রহটির ভর আগের চেয়ে ৮ গুণ বেড়েছে।
আবিষ্কারের ১৬ বছর পর ২০২৪ সালে টেলিস্কোপে দেখা যায় গ্রহটির চারপাশে গ্যাস এবং ধূলিকণার একটি বলয় তৈরি হয়েছে। বলয়টি থেকে ওই গ্যাস এবং ধূলিকণা ক্রমাগত গ্রহের উপর এসে জমা হচ্ছে। ফলে গ্রহটির ভর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সবসময় এর ভর একইভাবে বাড়েনা।
একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর গ্রহটির ভর বৃদ্ধি পায় এবং তারপর কমেও যায়। ২০১৬ সালেও একবার সাময়িকভাবে গ্রহটির ভর বেড়ে গিয়েছিল। ভর বৃদ্ধির সময় গ্রহটির বলয়ে বাষ্পের উপস্থিতি দেখা যায়। গ্রহটির এই দ্রুতগতিতে ভর বৃদ্ধির কারণ জানতে গবেষণা চলছে।