নারী নয়, এ প্রাণিদের পুরুষরাই জন্ম দেয় শিশুর
প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী সাধারণত নারী গর্ভধারণ করে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন এক ব্যতিক্রমী প্রাণিও আছে যাদের মধ্যে কেবল পুরুষরাই গর্ভধারণ করে।

প্রজনন পদ্ধতিতে অভিনবত্বের দাবি রাখে নোনা জলের ঘোড়া। এদের মধ্যে মহিলারা তাদের ডিমকে পুরুষদের তলপেটে থাকা এক বিশেষ থলিতে চালান করে দেয়। তারপর সেখানেই লালিত হতে থাকে এক নতুন প্রাণ।
ডিম থেকে ভ্রূণের সৃষ্টি হলে সেগুলি পুরুষের শরীরের ওই বিশেষ থলির মধ্যে লালিত পালিত হতে থাকে। তারা ওই থলি থেকেই তাদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও সঠিক পুষ্টি পেয়ে বড় হয়।
সঠিক অর্থে বলতে গেলে পুরুষ শরীরের ওই থলি ভ্রূণের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে কাজ করে। এরপর নির্দিষ্ট সময়ে পুরুষটি একটি পরিপূর্ণ শিশুর জন্ম দেয়।
এই প্রাণিটি সমুদ্রের ঘোড়া বা নোনা জলের ঘোড়া বা সিহর্স বলে পরিচিত। এদের মধ্যেই এই অদ্ভুত ধরনের প্রজনন পদ্ধতি রয়েছে। এরা দীর্ঘসময় ধরে মিলিত হয়।
তাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থেকে কখনও আবার দিনও পেরিয়ে যায়। মিলিত হওয়ার সময় স্ত্রী সিহর্স একটি নলের মত জিনিস ব্যবহার করে। সেটার মাধ্যমেই তারা পুরুষের শাবক থলিতে ডিমগুলিকে জমা করে।
গর্ভকালীন সময় কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। এটা সামুদ্রিক ঘোড়ার প্রজাতি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। তাদের এই থলিটি প্রাকৃতিক ভাবেই উচ্চমানের বিশেষ গঠনে তৈরি হয়। ফলে এখানে ভ্রূণদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়। এটি মূলত নাড়ির কাজ করে থাকে।
গর্ভধারণ করা পুরুষ সিহর্সরা তাদের ওই থলির মধ্যে ভ্রূণের বেড়ে ওঠার জন্যে সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে তার রাসায়নিক গঠনেও বদল আনতে পারে। যখন শিশুদের জন্মের সময় হয় তখন পুরুষরা একটা নির্দিষ্ট ছন্দে নিজেদের শরীরকে সংকুচিত ও প্রসারিত করে। ফলে থলিতে চাপ পড়ে খুব সহজেই সিহর্স শাবকগুলি থলি থেকে বেরিয়ে আসে।