Durga Pujo

১৬১০ সালে পুজোর শুরু, ৪০০ বছর পার করে আজও অমলিন প্রাচীন এই পুজো

সেসময়ে শহরে কোনও দুর্গাপুজো হত না। বলা ভাল শহরটাই সেভাবে তৈরি হয়নি। জলা-জঙ্গল পরিবৃত সেই জনপদে শুরু হওয়া পুজো শতাব্দীর পর শতাব্দী পার করে এখনও অম্লান।

Published by
News Desk

কলকাতার আদি দুর্গা পুজো হল সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের দুর্গাপুজো। একথা মোটামুটি সকলেরই জানা। ৯৭৫ সালে আদিশূর ছিলেন বাংলার শাসক। তিনি হিন্দুধর্মকে বাংলায় স্বমহিমায় ধরে রাখতে কনৌজ থেকে ৫ ব্রাহ্মণকে বাংলায় নিয়ে আসেন। তাঁদের মধ্যে একজন বেদগর্ভ। এই বেদগর্ভকেই সাবর্ণ রায়চৌধুরী বংশ তাদের আদিপুরুষ হিসাবে মনে করে। পরবর্তীকালে এই পরিবারের হাত ধরে ১৬১০ সালে আটচালার দুর্গাপুজো শুরু হয়।

সেসময়ে কলকাতায় কোনও দুর্গাপুজো হত না। বলা ভাল কলকাতাই সেভাবে তৈরি হয়নি। জলা-জঙ্গল পরিবৃত সেই জনপদে শুরু হওয়া দুর্গাপুজো কালক্রমে শতাব্দীর পর শতাব্দী পার করে এখনও অম্লান। এর মাঝে গঙ্গা দিয়ে বহু জল বয়ে গেছে। বহু ইতিহাস পার করে বরিষা সাঁঝের আটচালাবাটীর পুজো তাই একেবারে স্বতন্ত্র।

ইতিহাসের ভার সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের আদি দুর্গাপুজোকে মানুষের মনে অন্য সম্ভ্রমের জায়গায় বসিয়ে দিয়েছে। আগে এই আটচালা মণ্ডপ ছিল মাটি আর গোলপাতা দিয়ে তৈরি। এখন আর তা নেই। এখন সিমেন্টের আটচালাতেই দেবী ফি-বছর ফিরে আসেন। পূজিত হন।

সিমেন্ট বাঁধানো মন্দিরের সামনে পুরনো মন্দিরের স্মৃতি বহন করে চলেছে কয়েকটি থাম। যা ভিতের কাছে বিশেষ মজবুতির ব্যবস্থা করে, রং করে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ইতিহাসের স্মারক হিসাবে।

আদি পুজো একটি হলেও পরবর্তীকালে এই পরিবারে ১০-১১টি দুর্গাপুজোর প্রচলন হয়েছিল। বরিষাতে বর্তমানে মোট ৬টি পুজো হয়। ‘আটচালাবাড়ি’, ‘বড়বাড়ি’, ‘মেজবাড়ি’, ‘মাঝের বাড়ি’, ‘বেনাকি বাড়ি’ এবং ‘কালীকিঙ্করভবন’। এছাড়াও পুজো হয় ‘নিমতা’ এবং ‘বিরাটি বাড়ি’তে।

প্রতিবছরই এখানে পুজোর সময় বহু মানুষের সমাগম হয়। অনেকেই ঠাকুর দেখতে হাজির হন। চর্মচক্ষে প্রত্যক্ষ করে যান এক বহমান ইতিহাসকে। যে ইতিহাস কলকাতার বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী।

পুজোয় এখন খরচ আনুমানিক প্রায় ২ লক্ষ টাকা। সনাতনি রীতি মেনে শাস্ত্রীয় নিয়মে পুজো হয় এখানে। আর এভাবেই এগিয়ে যায় সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের ঐতিহাসিক দুর্গাপুজো।

Share
Published by
News Desk