পুজোর কার্নিভালে অভিনেত্রী ও সাংসদ নুসরত জাহানের পারফর্মেন্স, ছবি - আইএএনএস
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই শুরু। আর শুরুতেই বাজিমাত। প্রথমবারেই নজর কাড়ে পুজো কার্নিভাল। সেই পুজো কার্নিভাল পায়ে পায়ে এগিয়ে এবার আরও ঝলমলে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টের কিছুটা আগে রেড রোডের মঞ্চে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। টেরাকোটার কাজে ভরা মঞ্চে তিনি উপস্থিত হওয়ার পরই হাজির হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তাঁকে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নানা দেশের রাষ্ট্রদূতেরা। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ কলকাতা পুলিশের টর্নেডো বাহিনীর বাইক কসরত দিয়ে শুরু হয় ২০১৯ সালের পুজো কার্নিভাল।
চোখ কপালে তোলা বেশ কিছু বাইক স্টান্ট মুগ্ধ করে মানুষকে। তারপরই ছিল বাংলার প্রসিদ্ধ ছৌ নাচ। ছৌনাচের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরা হয় মহিষাসুর বধ। তারপর একে একে এগিয়ে আসতে থাকে পুজো কমিটিগুলি। প্রথম পুজো কমিটি হিসাবে এগিয়ে আসে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। এই পুজোর উদ্বোধন সাধারণত মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে হয়ে থাকে। এবার তা হয়নি। তবে এবার কার্নিভালের প্রথমেই ছিল তৃণমূলের দাপুটে নেতা তথা রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর এই পুজো। এবার প্রতিটি পুজো কমিটির জন্য ৩ মিনিট করে সময় ধার্য ছিল। এই ৩ মিনিটের মধ্যে তারা মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের সামনে তাদের পারফর্মেন্স তুলে ধরবে। তারপর প্রতিমা নিয়ে এগিয়ে যাবে। পরের পুজো কমিটি পিছনে এগিয়ে আসবে। এভাবেই এদিন দ্বিতীয় কমিটি হিসাবে এগিয়ে আসে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পুজো একডালিয়া এভারগ্রীণ।
বরানগরের দাদাভাই সংঘের পুজো এবার হুইল চেয়ারে বৃদ্ধাদের এনে চমক দিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে তুলনা করেছে মা দুর্গাকে। সঙ্গে নচিকেতার গান। এদিন অনেক পুজো কমিটির কাজই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মঞ্চ থেকে নেমে এসে অনেককে অভিনন্দন জানান তিনি। সন্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গে রেড রোড এদিন সেজে ওঠে কনের সাজে। ঝলমলে আলো, ঢাকের বাদ্যি, গান, নাচ, বাহারি ট্যাবলো, নানা উপস্থাপনা, ভাবনা সব মিলেমিশে সন্ধেটা যেন একদম অন্যরকম হয়ে উঠেছিল এখানে। ত্রয়োদশীতেও উৎসব যেন আরও একবার ছুঁয়ে গেল বাঙালিকে।
শুক্রবার মোট ৭১টি পুজো কার্নিভালে অংশ নিয়েছিল। কলকাতার উত্তর প্রান্ত থেকে দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত এলাকা জুড়ে বিভিন্ন পুজো কমিটি জায়গা পায় এই তালিকায়। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পুজো হিসাবে পরিচিত চেতলা অগ্রণী এদিন সারিবদ্ধভাবে ৭০ তম পুজো কমিটি হিসাবে কার্নিভালে জায়গা পেয়েছিল। প্রতিটি পুজো কমিটি এদিন সর্বাধিক ৫০ জনকে নিয়ে নিজেদের উপস্থাপনা তুলে ধরে। সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য এক কার্নিভাল রাজ্যবাসীকে উপহার দেওয়া হল। যা অনেকদিন মনে থাকবে সকলের।