জলের তলায় ডুব সাঁতার দেয় আবার আকাশেও ডানা মেলে, সঙ্গিনীর ক্ষেত্রেও এরা নজরকাড়া
প্রকৃতির আশ্রয়ে বেড়ে ওঠা সকল প্রাণিই নিজের নিজের জায়গায় অনন্য। তাদেরই মধ্যে কেউ কেউ আবার কিছু বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে সবার নজর কেড়ে নেয়।
ছোট্ট ডানাওয়ালা এক সামুদ্রিক পাখি যারা একইসঙ্গে ডুব সাঁতার দিতে পারে, আবার আকাশেও উড়তে পারে। তবে সেটি সমুদ্রের উপরের আকাশ হতে হবে। পাখিটি প্রতি মিনিটে প্রায় ৪০০ বার ডানা ঝাপটায়। ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার বেগে ওড়ে।
সাঁতার কাটার সময় পাফিন নিজের ডানাকে পাখনার মত ব্যবহার করে। জলের নিচে ৬০ মিটার গভীরে গিয়ে পাফিন মাছ শিকার করতে ওস্তাদ। এরা একসাথে ১২টির বেশি মাছ শিকার করেনা। তবে একসঙ্গে ৭০টি পর্যন্ত মাছকে ঠোঁটে ধরার রেকর্ডও এদের রয়েছে।
ঠোঁটের গড়নটি অদ্ভুত ধরনের হওয়ায় পাফিন মাছ শিকারে দক্ষ হয়। পাখিটির ঠোঁট অবিকল পলাশ ফুলের মত। ঠোঁটের রঙ লাল, নীল ও হলদে হয়। ঠোঁটটি আকারেও বেশ বড়। ঠোঁটের আকৃতির কারণে এদের সামুদ্রিক তোতাপাখিও বলা হয়।
পাফিনের ৩টি প্রজাতি। আটলান্টিক পাফিন, হর্নড পাফিন এবং টাফটেড পাফিন। পাফিন ১৩ থেকে ১৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। পুরুষ ও স্ত্রী পাফিন দেখতে একইরকম। তবে পুরুষটি আকারে একটু বড় হয়। গায়ের রং পেঙ্গুইনের মত সাদা কালো মেশানো। মাথায় কালো টুপির মত অংশ থাকে। পায়ের রং হয় কমলা।
পাফিন নিয়ে অবাক করা তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা। পেঙ্গুইনের মতো এরাও একটিমাত্র সঙ্গীকে নিয়েই সারাজীবন কাটায়। স্ত্রী পাফিন বছরে একটিই ডিম পাড়ে। স্ত্রী ও পুরুষ মিলে পালা করে ডিমে তা দেয়। বাচ্চা হলে ২ জনে মিলেই তার দেখাশোনা করে।
পাফিনরা সংঘবদ্ধ অবস্থায় উত্তর গোলার্ধে বাস করে। বসন্ত আর গ্রীষ্মে পাফিনদের ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়াতে দেখা যায়। শীতে সচরাচর এদের দেখা মেলেনা। তবে মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও এরা বহাল তবিয়তে থাকতে সক্ষম।

