World

৭৫ বছর পর ৬৫ বছরের বোনের সঙ্গে দেখা দাদার, কেঁদে ভাসালেন ২ জনে

৭৫টা বছর কেটে গেছে। দুনিয়া বদলে গেছে। বোনকে জন্মেও দেখেননি দাদা। তবু নাড়ির টান যায় কোথায়! অবশেষে তাঁদের দেখা হল।

Published by
News Desk

ভাইবোনের সম্পর্কের টান কেবল তারাই বোঝে। তাই যে বোন জন্মে পর্যন্ত দাদাকে চোখে দেখেননি, যে দাদা বোনকে জন্মাতে দেখেননি। নিজেদের বৃদ্ধ বয়সে এসে যাঁরা একে অপরকে প্রথমবার দেখলেন, সেই ২টি মানুষের সেই সাক্ষাৎ অনেক মানুষের চোখে জল এনে দিল।

সেই ১৯৪৭ সাল। ভারত স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেদিন ২টি দেশ আলাদা হয়ে গিয়েছিল। ভিটেমাটি সম্পর্ক সব ছেড়ে হাজার হাজার মানুষ চোখের জলে ২টি ভূখণ্ডে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরাও ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন সেই ভাগ বাঁটোয়ারায়।

সেই সময় অমরজিৎ সিংয়ের বয়স ছিল মাত্র কয়েক মাস। দুধের সেই শিশু ২টি দেশের টুকরো হওয়ায় জেরে হারিয়েছিল মা বাবাকে। তার মুসলিম মা বাবা চলে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে। আর অমরজিৎ সিং ও তাঁর এক বোন রয়ে গিয়েছিলেন ভারতে।

এই ২ দুধের শিশুকে নিজেদের সন্তানের মত মানুষ করে এক শিখ পরিবার। তাদেরই নাম ও পদবি হয়ে ওঠে ২ ভাইবোনের পরিচিতি। পরে অবশ্য অমরজিৎ সিংয়ের ওই বোনের মৃত্যু হয়।

এদিকে দেশ ভাগাভাগির পর সিন্ধু, বিপাশা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। বদলে গেছে দুনিয়া। ভারত তার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি পালন করছে।

এরমধ্যে অমরজিৎ জানতে পেরেছিলেন তাঁর এক বোন রয়েছেন পাকিস্তানে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। অবশেষে ৭৫ বছর পর বিশেষ উদ্যোগে অমরজিৎ পৌঁছলেন ওয়াঘা সীমান্ত পার করে পাকিস্তানে কেবল বোনকে দেখতে।

৭৫ বছরের বৃদ্ধ মানুষটি যখন করতারপুরের গুরুদ্বার দরবার সাহিব-এ তাঁর ৬৫ বছরের বোনকে দেখলেন তখন আর তাঁর চোখের জল বাধা মানেনি। দাদাকে দেখে কুলসুম আখতার জড়িয়ে ধরেন দাদাকে।

ভাইবোন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। চোখের জল বাঁধ মানেনি আশপাশের মানুষজনেরও। একটা কাঁটাতারের বেড়া যে কত হৃদয়কে দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিয়েছিল, শেষ করে দিয়েছিল হাজার হাজার পরিবারকে, সে ছবি আজও অমরজিৎ কুলসুমদের চোখের জল বারবার জানান দিয়ে যায়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Share
Published by
News Desk
Tags: Pakistan

Recent Posts