SciTech

দেখতে মানুষের মত, শরীর সাপের মত, স্বভাব মাছের মত, ডাকনাম মানুষ মাছ

পৃথিবীজুড়ে আবিষ্কারের সংখ্যা যত বাড়তে থাকে ততই বেড়ে চলে নতুন কিছু খুঁজে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। আর এভাবেই কখন যেন মাছের মধ্যেও মানুষকে খুঁজে পাওয়া গেছে।

অন্ধকার গুহায় বসবাসকারী এমনই এক রহস্যময় প্রাণি আছে যাতের দেখতে অনেকটা মানুষের হাতের মত। কিন্তু মুখের গড়ন মাছের মত। আবার এদের সর্পিল আকৃতির জন্য এদের অনেকসময় সাপ বলেও ভুল হয়। আদপে এটি মাছ বা সাপ বা মানুষ কোনওটিই নয়।

এই বিশেষ প্রজাতির নাম হিউম্যান ফিশ বা ওলম। এরা ইউরোপে চুনাপাথরের গুহার গভীরে বসবাসকারী মেরুদণ্ডী প্রজাতি। এরা মূলত উভচর হলেও জলের নিচেই খায়, ঘুমোয় এবং শ্বাস নেয়।

এদের দেখতে খুবই অদ্ভুত ধরনের হয়। মাথাটা লম্বাটে ও দেহের চেয়ে চওড়া। আর মুখের ভিতরে ছোট ছোট দাঁত থাকে। অন্ধকারে থাকতে থাকতে এদের চোখ প্রায় বিকশিতই হয়না। আর বয়স্ক ওলমদের চোখ চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকায় তাদের অন্ধ বলে মনে হয়।

দেহের গঠন সাপের মত হয়। ওজন হয় ১৫ থেকে ২০ গ্রামের মধ্যে। লম্বায় এরা ২০ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার হয়। তবে কেউ কেউ আবার ৪০ সেন্টিমিটার অবধিও লম্বা হয়।

শতাব্দীর পর শতাব্দী ঘন অন্ধকার আর স্যাঁতস্যাঁতে গুহায় থাকার জন্য অভিযোজিত হয়ে এদের শরীরে রঞ্জক পদার্থের পরিমাণ আস্তে আস্তে কমে গেছে। তাই এদের চামড়ার রঙ মানুষের মত ফ্যাকাসে গোলাপি হয়। এই কারণেই এদের ‘মানব মাছ’ বলা হয়।

ওলমদের আয়ু বেশ দীর্ঘ হয়। ১০০ বছরেরও বেশি সময় বাঁচতে পারে এরা। মোটামুটি প্রতি সাড়ে ১২ বছরে একবার নতুন ওলমের জন্ম হয়। এদের একটি ব্যতিক্রমী পুনর্জন্ম ক্ষমতাও রয়েছে।

এমনকি ওলমরা নিজেদের কোনও বিচ্ছিন্ন অঙ্গ পুনরায় বৃদ্ধি করতে পারে। এরা মূলত লালচে ঝলমলে ফুলকা দিয়ে শ্বাস নেয়। তবে এদের কার্যকরি ফুসফুসও থাকে।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় ওলমরা প্রকৃতির তৈরি এমন এক জীবন্ত রহস্য যারা ১০ বছর অবধি না খেয়ে থাকতে পারে। এদের খাদ্য হল ছোট চিংড়ি, শামুক এবং পোকামাকড়। অন্ধকারে বাস করার দীর্ঘ অভ্যাসের কারণে এদের ত্বক আলোক সংবেদনশীল হয়। তাই সূর্যের আলো এরা সহ্য করতে পারেনা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *