Mythology

মহাষ্টমীর দিন নবদুর্গার কোন রূপের পুজো করলে দুঃখ দৈন্য ও পাপ নাশ হয়

ভক্ত বা উপাসকের সার্বিক কল্যাণ হয় দেবীর স্মরণ মনন পুজো ও আরাধনা করলে। ভক্তের সমস্ত কলুষ নাশ হয়ে দূর হয়ে যায় পূর্বসঞ্চিত পাপরাশি।

Published by
Sibsankar Bharati

রামচন্দ্র দুর্গাপুজোর পক্ষে অকাল বলেছিলেন শরৎকালকে, কেন? শরৎকাল, সূর্যের দক্ষিণায়ন। সমস্ত দেবদেবীর নিদ্রার সময়। অনন্যোপায় ভগবান ব্রহ্মা দেবী দুর্গাকে জাগরিত করলেন স্তবস্তুতি করে। দেবী তখন কুমারীর বেশে এসে ব্রহ্মাকে বললেন, বিল্বমূলে দুর্গার বোধন করতে। দেবীর আদেশ যথানিয়মে পালন করলেন পিতামহ ব্রহ্মা।

মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয়রাত্রি ব্যাপী দেবী দুর্গার নয়টি রূপ ও শক্তির যে আরাধনা করা হয় সেটিই নবরাত্রি ব্রত।

দেবী দুর্গার নয়টি রূপের নামকরণ করেছিলেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামের নয়টি বৈচিত্র্যময় রূপভেদ ও শক্তি। এঁরা প্রত্যেকেই দেবী দুর্গার নয়টি কায়াব্যূহ মূর্তি। এই নয়টি নামের উল্লেখ আছে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে।

মহাগৌরী

নবরাত্রি পুজোর অষ্ঠম দিনে পূজিতা দেবী মহাগৌরী – ছবি – সৌজন্যে – গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর

মহাগৌরী দেবী দুর্গার অষ্টম শক্তি, রূপেও অষ্টম। দেবী বয়েসও আট, ‘অষ্টমবর্ষা ভবেদ গৌরী’ ‘দেবী অপ্রাপ্ত বয়স্কা, বালিকারূপী।’ চণ্ডীতে বলা হয়েছে, ‘স্ত্রিয় সমস্তাঃ সকলাজগৎসু’ অর্থাৎ জগতের সকল স্ত্রীই তোমার অংশস্বরূপ। এই রূপ থেকে দুর্গাপুজোর মহাষ্টমীতে এসেছে কুমারী পুজোর অমৃতময় ভাবনা।

এক সময় দেবী দুর্গা পর্বতকন্যা পার্বতীরূপে কঠোর কঠিন নির্মম তপস্যা শুরু করলেন ভগবান শিবকে স্বামীরূপে লাভ করার জন্য। স্থানটি হরিদ্বারের একপ্রান্তে পাহাড়ি ঢালে জঙ্গল বেষ্টিত বিল্বকেশ্বর মহাদেব মন্দিরক্ষেত্রে। ‘নারদ পঞ্চরাত্র’-এর মতো প্রেমিক কবি মরমিয়া সাধক তুলসীদাসও বলেছেন তাঁর গ্রন্থে, দেবী পার্বতী কঠোর সংকল্প করেছিলেন।

দেবীর গায়ের রং গৌর। দেবীর গায়ের রঙের সঙ্গে তুলনা করা হয় শঙ্খ চন্দ্র ও কুন্দফুলের। শ্বেতবর্ণের বস্ত্র, সর্বাঙ্গের কারুমণ্ডিত অলংকারও। দেবীর ডানদিকের উপরের হাতে অভয়মুদ্রা, নিচের হাত ত্রিশূলশোভিত। বামের উপরের হতে ধরা ডমরু এবং বরমুদ্রায় নিচের হাত। দেবী চতুর্ভুজা। তাঁর বাহন বৃষ।

ভক্ত বা উপাসকের সার্বিক কল্যাণ হয় দেবীর স্মরণ মনন পুজো ও আরাধনা করলে। ভক্তের সমস্ত কলুষ নাশ হয়ে দূর হয়ে যায় পূর্বসঞ্চিত পাপরাশি। ভবিষ্যতেও কখনও তাকে স্পর্শ করে না দুঃখ দৈন্য ও পাপ সন্তাপ। সর্বপ্রকার পবিত্র ও অক্ষয় পুণ্যের অধিকারী হয় ভক্ত ও উপাসক।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ‘নবদুর্গা’ অনুবাদিকা গায়ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর। ছবি এঁকেছেন পরমেশ এবং বি.কে. মিত্র। এদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ রইলাম ক্ষমা প্রার্থী হয়ে। সহায়ক গ্রন্থ শ্রীশ্রীচণ্ডী। এছাড়াও শাস্ত্রীয় শিক্ষাগুরু স্বর্গীয় জ্ঞানদাপ্রসাদ চৌধুরী। কৃতজ্ঞতা ভাষা বা লেখায় প্রকাশ করা যায় না। এ অন্তরের এক আনন্দময় অনুভূতি যে। – শিবশংকর ভারতী, ছবি – সৌজন্যে – গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর

Share
Published by
Sibsankar Bharati