Mythology

দ্বিতীয়ার দিন যে দেবীর পুজো করলে কঠিন পরিস্থিতিতেও অবিচল থাকা যায়

মানুষের জপতপ ত্যাগ তিতিক্ষা বৈরাগ্য সংযম ও সদাচার বৃদ্ধি পায় তাঁর উপাসনা দ্বারা। উপাসক ও ভক্তের মন কিছুতেই বিচলিত হয় না জীবনের কঠিন পরিস্থিতিতে। মন অবিচলিত থাকে নিজ কর্তব্যে।

Published by
Sibsankar Bharati

রামচন্দ্র দুর্গাপুজোর পক্ষে অকাল বলেছিলেন শরৎকালকে, কেন? শরৎকাল, সূর্যের দক্ষিণায়ন। সমস্ত দেবদেবীর নিদ্রার সময়। অনন্যোপায় ভগবান ব্রহ্মা দেবী দুর্গাকে জাগরিত করলেন স্তবস্তুতি করে। দেবী তখন কুমারীর বেশে এসে ব্রহ্মাকে বললেন, বিল্বমূলে দুর্গার বোধন করতে। দেবীর আদেশ যথানিয়মে পালন করলেন পিতামহ ব্রহ্মা।

মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয়রাত্রি ব্যাপী দেবী দুর্গার নয়টি রূপ ও শক্তির যে আরাধনা করা হয় সেটিই নবরাত্রি ব্রত।

দেবী দুর্গার নয়টি রূপের নামকরণ করেছিলেন পিতামহ ব্রহ্মা। নয়টি নামের নয়টি বৈচিত্র্যময় রূপভেদ ও শক্তি। এঁরা প্রত্যেকেই দেবী দুর্গার নয়টি কায়াব্যূহ মূর্তি। এই নয়টি নামের উল্লেখ আছে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে।

ব্রহ্মচারিণী

নবরাত্রি পুজোর দ্বিতীয় দিনে পূজিতা দেবী ব্রহ্মচারিণী – ছবি – সৌজন্যে – গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর

শিবপ্রিয়া দেবী দুর্গার নবরাত্রিকালে দ্বিতীয়ায় দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণী। ব্রহ্ম শব্দের অর্থ এক্ষেত্রে তপস্যা। অভিধান মতে ব্রহ্মশব্দের অর্থ হল বেদ, তত্ত্ব এবং তপ। দেবর্ষি নারদের পরামর্শে কঠোর কঠিন ও নির্মম তপস্যা শুরু করলেন দেবী ভগবান শঙ্করকে পতিরূপে লাভ করার জন্য। এই কঠোর তপস্যার পর দিবারাত্র ভগবান শঙ্করকে স্বামীরূপে লাভ করার জন্য তিন হাজার বছর জীবন কাটালেন শুধুমাত্র মাটিতে গাছ থেকে ঝরে পড়া বেলপাতা আহার করে। এরপর তিনি সেই শুষ্ক বেলপাতা আহারও পরিত্যাগ করলেন নির্বিকারে। কয়েক হাজার বছর তপস্যায় নিরত হলেন নির্জলা, নিরাহারে। এই কঠিন তপস্যার জন্য দেবীকে বলা হয় তপশ্চারিণী বা ব্রহ্মচারিণী।

মানুষের জপতপ ত্যাগ তিতিক্ষা বৈরাগ্য সংযম ও সদাচার বৃদ্ধি পায় তাঁর উপাসনা দ্বারা। উপাসক ও ভক্তের মন কিছুতেই বিচলিত হয় না জীবনের কঠিন পরিস্থিতিতে। মন অবিচলিত থাকে নিজ কর্তব্যে। দেবী স্বয়ং জ্ঞান দান করেন ব্রহ্মাকে, ব্রহ্মপ্রাপ্তি করান ভক্তকেও।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ‘নবদুর্গা’ অনুবাদিকা গায়ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর। ছবি এঁকেছেন পরমেশ এবং বি.কে. মিত্র। এদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ রইলাম ক্ষমা প্রার্থী হয়ে। সহায়ক গ্রন্থ শ্রীশ্রীচণ্ডী। এছাড়াও শাস্ত্রীয় শিক্ষাগুরু স্বর্গীয় জ্ঞানদাপ্রসাদ চৌধুরী। কৃতজ্ঞতা ভাষা বা লেখায় প্রকাশ করা যায় না। এ অন্তরের এক আনন্দময় অনুভূতি যে। – শিবশংকর ভারতী, ছবি – সৌজন্যে – গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর

Share
Published by
Sibsankar Bharati