National

গোটা গ্রামই একটা আর্ট গ্যালারি, পুরী গেলে ঘুরে আসতে পারেন এই মন ভাল করা গ্রামে

শিল্পনৈপুণ্যে ভারতের কোনও বিকল্প হয়না। দেশের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে রয়েছে শিল্প বৈচিত্র্য। পুরীর কাছে রয়েছে একটা গ্রাম। এ শুধু গ্রাম নয়, যেন একটা প্রদর্শনশালা।

মৌসুমি গুহ মান্না, রঘুরাজপুর (ওড়িশা) : নারকেল, সুপুরি, তালপাতা, নরম কাপড়, কাঠ, কাগজের মত কিছু অতি সাধারণ উপকরণ। যেগুলি সবকটিই প্রকৃতির দান। যার উপর শুধুমাত্র পেন, পেনসিল এবং প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করে কিংবা খোদাই করে প্রতিনিয়ত ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন অবয়ব। শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় অতি মামুলি জিনিস হয়ে উঠছে অনুপম শিল্পকীর্তি।

বাংলার প্রতিবেশি রাজ্যেই রয়েছে এমন এক গ্রাম। যে গ্রামে বিখ্যাত ওড়িশি নৃত্যগুরু কেলুচরণ মহাপাত্র জন্মগ্রহণ করেন। সেই গ্রামটির প্রায় ১২০টি পরিবার পট্টচিত্র বা পটচিত্র, গোটিপুয়া নৃত্য, তালপাতার খোদাই, মুখোশ এবং অন্যান্য শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প গ্রামটি ওড়িশায় অবস্থিত। নাম রঘুরাজপুর। পুরীর কাছেই এই গ্রাম। যে গ্রামকে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারের পক্ষ থেকে ভারতের প্রথম ঐতিহ্যবাহী গ্রাম হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে।

গ্রামের মাটিতে পা দিলেই প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালে শিল্পকলা দেখতে পাওয়া যায়। যা এই গ্রামকে একটি জীবন্ত শিল্প গ্যালারিতে পরিণত করেছে। যে কোনও বাড়িতে ঢুকলেই পটচিত্রের বিপুল সম্ভার চোখে পড়ে। শিল্পীরা এখানে নিজেদের বাড়িতেই তাঁদের কাজ প্রদর্শন ও বিক্রি করেন।

ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ী শিল্পীরা কাগজ, বিভিন্ন ধরনের সিল্ক, তসর এবং সুতির কাপড়ের উপর ছবি আঁকেন। এছাড়া কাঠ ও পাথরের উপর সুন্দর খোদাই কাজও এই গ্রামে হয়। শিল্পীরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নারকেল, সুপুরি এবং কাচের বোতলের গায়ে শিল্পকলা ফুটিয়ে তোলেন। নারকেলের ছোবড়া দিয়ে অসাধারণ বাবুইপাখির বাসাও বানান তাঁরা।

তালপাতা ভাঁজ করে তার ওপর পটচিত্র অঙ্কন রঘুরাজপুরের শিল্পীদের একটি অন্যতম দক্ষতা। এঁদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন হস্তশিল্প মেলাতে অংশগ্রহণ করেন। তবে শিল্পীদের একটাই আক্ষেপ, পুরীতে সারাবছর ভ্রমণার্থীদের যাতায়াত লেগে থাকলেও তাঁদের গ্রামের এই অনন্য শিল্পকর্ম দেখতে বা কিনতে খুব কম পর্যটকই হাজির হন।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *