National

২০ বছর আগে গঙ্গাসাগর মেলায় হারিয়ে যাওয়া মহিলার খোঁজ মিলল, তবে ভারতে নয়

২০ বছর আগের কথা। গঙ্গাসাগর মেলায় তিনি হাজির হয়েছিলেন পুণ্য অর্জনের আশায়। তারপর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। অবশেষে খোঁজ মিলল। তবে ভারতে নয়।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই প্রতিবছর মানুষ মকরসংক্রান্তিতে হাজির হন গঙ্গাসাগর মেলায়। পুণ্য অর্জনের আশায় ডুব দেন সাগরের জলে। দর্শন করেন কপিল মুনির আশ্রম। সাধুসঙ্গের আনন্দও লাভ করেন তাঁরা।

গঙ্গাসাগরের সেই পুণ্যস্নানে শামিল হতে মধ্যপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর মেলায় হাজির হয়েছিলেন রাধিকা। তাঁর তখন বছর ৫০ বয়স। এক তীর্থযাত্রী দলের সঙ্গে তিনি গঙ্গাসাগরে হাজির হন। কিন্তু কোনওভাবে যে দলের সঙ্গে তিনি এসেছিলেন সেই দলের সঙ্গ হারান রাধিকা।

হারিয়ে গিয়ে তিনি অন্য একটি দলের সঙ্গে জুড়ে যান। কিন্তু সে দলটি এসেছিল বাংলাদেশ থেকে। তাদের সঙ্গে নিজের গ্রামে ফিরছেন ভেবে রাধিকা পৌঁছে যান বাংলাদেশে। বিদেশ বিভূঁইয়ে একা হয়ে পড়েন তিনি। জীবন ধারণের জন্য বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি।

ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব হ্যাম রেডিও মারফত এমন বহু হারিয়ে যাওয়া মানুষকে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত করেছে। ওই রেডিও ক্লাবের সদস্যরা রাধিকারও খোঁজ পান। তারপর শুরু হয় তাঁর আদি বাসস্থানের খোঁজ।

রাধিকা বাংলাদেশের পথে পথে ভিক্ষা করতেন। আর তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেই বলতেন সাগর। সাগর কি? এই খোঁজ করতে শুরু করে অবশেষে হ্যাম রেডিও-র সদস্যরা জানতে পারেন মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার খাজরা গ্রামের এক মহিলার নিরুদ্দেশ হওয়ার খবর।

কিন্তু রাধিকার বর্তমান ছবি দেখালেও কেউ তাঁকে সেখানে চিনতে পারেননি। অগত্যা হ্যাম রেডিও বাংলাদেশের সদস্যরা রাধিকাকে সেখানকার একটি পার্লারে নিয়ে গিয়ে তাঁর পুরনো রূপ ফেরানোর চেষ্টা করেন। সেই ছবি পাঠানো হয়। এবার কিন্তু মাকে চিনতে ভুল করেননি তাঁর ২ সন্তান।

রাধিকা যখন হারিয়ে যান তখন তাঁর স্বামী ও ৩ সন্তান ছিলেন মধ্যপ্রদেশে। এখন তাঁর স্বামী ও বড় ছেলে প্রয়াত। বাকি ২ ছেলে দিল্লিতে কর্মরত। তাঁরা এবং ওই গ্রামের বাসিন্দারা রাধিকাকে চিনতে পেরেছেন।

সকলেই এখন অধীর অপেক্ষায় কবে গ্রামে ফিরবেন গ্রামের ওই গৃহবধূ। ৭০ বছরের রাধিকাকে ভারতে ফেরাতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা শুরু হয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *