মাইনাসে পারদ, ঠান্ডা থেকে বাঁচতে পোশাকের তলায় গরম কাঠকয়লা নিয়ে ঘুরছেন মানুষজন
দেশের কয়েক জায়গায় ঠান্ডা মাইনাসে পৌঁছে গেছে। কাশ্মীরে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছেন বাসিন্দারা। ঘুরছেন শতাব্দী প্রাচীন প্রথা মেনে পোশাকের তলায় তপ্ত কাঠকয়লা নিয়ে।
কাশ্মীর কাঁপছে। অনেক জায়গায় তুষারপাত হচ্ছে। পারদ নামছে তরতর করে। খোদ শ্রীনগরেই পারদ নেমে গেছে মাইনাস ২.৮ ডিগ্রিতে। পহেলগামের হাল আরও শোচনীয়। সেখানে ইতিমধ্যেই পারদ পৌঁছে গেছে মাইনাস ৩.৫ ডিগ্রিতে। গুলমার্গ শূন্য ডিগ্রিতে কাঁপছে।
যদিও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের জন্য এটা সেই ঠান্ডা নয়, যাকে তাঁরা শীতের ঠান্ডা বলে জানেন। সেখানে ৪০ দিনের একটি ঠান্ডার পর্ব আসে প্রতিবছর। ডিসেম্বরের ২১ তারিখ থেকে জানুয়ারি মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময়ে হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে জীবন কাটান কাশ্মীরবাসী।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করে বাঁচার পথও তাই এখানে শতাব্দী প্রাচীন। ওই ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে আজও প্রাচীন এক উপায়ই ভরসা প্রতিটি কাশ্মীরবাসীর। সেই পোশাক ইতিমধ্যেই গায়ে চড়েছে তাঁদের।
পোশাকটির নাম ‘ফেরান’। সেখানে যে ঠান্ডা তা সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার দিয়ে কাটে না। তাই শরীরকে উত্তপ্ত রাখতে এই প্রাচীন শরীর মোড়া ঢোলকা ঢোলা মত পোশাকই ভরসা প্রতিটি কাশ্মীরবাসীর।
তার পরেও তাঁদের ঠান্ডা লাগে। তাই সেই ঠান্ডা কাটাতে তাঁরা আরও এক প্রাচীন প্রথা মেনে চলেন। ওই ঝোলা পোশাকের মধ্যে ঝুলিয়ে রাখেন ‘কাঙ্গরি’। কাঙ্গরি হল একধরনের উইলো কাঠের পাতলা বেতের মত ছাল দিয়ে তৈরি ঝুড়ি।
এ ঝুড়ি একটু অন্যরকম দেখতে হয়। যার মধ্যে থাকে একটি ফাঁকা অংশ। তারমধ্যে উত্তপ্ত কাঠকয়লা দেওয়া থাকে। কাঠকয়লা বা চারকোলের উত্তাপ পোশাকের মধ্যেই থেকে যায়। কারণ তা ফেরান দিয়ে ঢাকা থাকে।
ওই উত্তাপ কাশ্মীরবাসীকে চরম শীতেও গরম অনুভব করতে সাহায্য করে। যা তাঁদের প্রবল ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে। এই নভেম্বরের শেষেই এমন ঠান্ডার প্রাবল্য এতটা যে কাশ্মীরবাসী এখনই শরীর ফেরানে মুড়ে তার মধ্যে কাঙ্গরি ঝুলিয়ে ঘুরতে বাধ্য হচ্ছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা













