অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা করতে পারে উটের চোখের জল, বলছে গবেষণা
পৃথিবীতে সব দেশের মধ্যে সাপের কামড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ভারতীয়দের। এবার উটের চোখের জলে প্রাণ রক্ষার রসদ খুঁজে পেলেন গবেষকেরা।

গ্রামাঞ্চলগুলিতে সাপের কামড়ে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে সেখানে সর্পাঘাতে মানুষের বাঁচার আশা কমে। আর বাঁচলেও সময়মত চিকিৎসার অভাবে অনেকে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যান। সব গ্রামে সময়মত অ্যান্টিভেনম পাওয়া যায়না বলে সাপের বিষে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি চরম আকার নেয় প্রতিবছর। এবার তা থেকে মুক্তির নতুন পথ দেখাচ্ছে উটের এক বিন্দু চোখের জল।
মরুভূমির নিরীহ জাহাজই এবার তার মূল্যবান অশ্রুবিন্দু দিয়ে সাপে কামড়ানো মানুষের প্রাণ বাঁচাবে। সম্প্রতি রাজস্থানের বিকানেরের ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অন ক্যামেল বা এনআরসিসি-এর যুগান্তকারী গবেষণায় দেখা গেছে উটের চোখের জলে পাওয়া অ্যান্টিবডি সাপের ভয়ংকর বিষকে শরীর থেকে নির্মূল করে দিতে পারে। উটের চোখের জলে থাকা অ্যান্টিবডির এই অসামান্য ক্ষমতার কথা গবেষকেরা সামনে এনে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
গবেষকেরা একধরনের চন্দ্রবোড়া সাপের বিষ দিয়ে তৈরি টিকা উটের শরীরে প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষাটি করেছেন। তাতে দেখা গেছে উটের চোখের জলে পাওয়া প্রতিষেধক সেই বিষের কার্যকারিতা কমাতে দারুণ কাজ করেছে। সবচেয়ে বড় কথা, সাপের কামড়ে হওয়া রক্তক্ষরণ এবং রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধেও প্রতিষেধকটি বিশেষভাবে কার্যকর।
এমনিতে ঘোড়ার ইমিউনোগ্লোবিউলিন থেকে প্রচলিত অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। তবে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেকসময় অ্যালার্জি হয়। এছাড়া অ্যান্টিভেনমটি তৈরি করা জটিল এবং খরচ সাপেক্ষ।
অন্যদিকে উটের চোখের জল থেকে প্রতিষেধক তৈরির খরচ তুলনামূলকভাবে কম হবে বলেই দাবি করেছেন গবেষকেরা। তবে এখনও সাপের বিষের প্রতিষেধক হিসাবে উটের চোখের জল ব্যবহার শুরু হয়নি।
আগামী দিনে উট মালিকরা এনআরসিসি-এর কাছে উটের চোখের জল বিক্রি করে প্রতিমাসে উট পিছু আনুমানিক ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন। তাই এই গবেষণায় সাপের বিষে জীবনহানির পরিমাণ কমার সাথেই স্থানীয় মানুষের জন্য নতুন উপার্জনের রাস্তাও খুলতে পারে রাজস্থানে।