বিমানের চাকায় লুকিয়ে অন্য দেশ থেকে ভারতে ১৩ বছরের কিশোর, আশ্চর্য রক্ষা
এক কিশোরের সফরের কাহিনিতে সবাই অবাক। প্রশ্ন উঠেছে বিমানবন্দরের কড়া নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কীভাবে সে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বিমানের চাকার কাছে লুকিয়ে পড়তে পারল।

অদ্ভুত কাণ্ড বললেও বোধহয় কম বলা হয়! বিমানের চাকার ল্যান্ডিং গিয়ারে লুকিয়ে একটি ১৩ বছরের কিশোর কাবুল থেকে দিল্লি পৌঁছে গেল। অথচ কেউ কিছু জানতেই পারল না।
কিশোরটি আসলে ইরানের রাজধানী তেহরান যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সে জানত না কোন বিমান সেখানে পৌঁছয়। তাই সে সামনে যে বিমানটি পায় সেটির ল্যান্ডিং গিয়ারে লুকিয়ে উঠে পড়ে। তার কাছে কোনও টিকিট ছিলনা।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টা নাগাদ সে কাবুল বিমানবন্দরে লুকিয়ে ঢুকে একটি বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে লুকিয়ে পড়ে। বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে নামলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায় বিমানটি অবতরণের পর তারা এক কিশোরকে সেখানে দেখতে পায়।
অভিভাবক শূন্য অবস্থায় ওই কিশোর এদিক ওদিক ঘুরছিল। তাই দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত আধিকারিকদের। তখন তাঁরা তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। কিশোর জানায় নিছক কৌতূহলের বশেই সে এই কাজটি করেছে। তাকে জিজ্ঞাসা করে তাঁরা আরও জানতে পারেন যে সে আফগানিস্তানের কুন্দুজের বাসিন্দা।
কৌতূহলবশতই সে ওই বিমানের পিছনের ল্যান্ডিং গিয়ার কম্পার্টমেন্টে উঠে লুকিয়ে পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সবদিক খতিয়ে দেখে ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কিশোরটিকে তার দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা পরে বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার তল্লাশি করেন। সেখানে তাঁরা কিশোরের ফেলে যাওয়া একটি লাল স্পিকার খুঁজে পান। তবে সবদিক দেখে তাঁরা বিমানটিকে নিরাপদ ঘোষণা করেন। তারপর সেটি পরবর্তী যাত্রার জন্যে প্রস্তুত হয়।
জানা যাচ্ছে, বিমানের বাইরে কিশোরটি যেখানে লুকিয়ে ছিল সেখানে কারও পক্ষে বেঁচে থাকাই প্রায় অসম্ভব। উড়ানের পর বিমানের চাকা পিছনে সরে যায়। দরজা বন্ধ হয়ে যায়। হয়ত সে সেখানেই লুকিয়ে ছিল।
এই ঘটনায় বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই আরও একটি প্রশ্ন মাথাচাড়া দিচ্ছে। আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে অন্য দেশে চলে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছেন মানুষজন। তারই কি ফল এই কিশোরের দুঃসাহসিক দেশত্যাগ?