উচ্চতা ৩ ফুট, বিশ্বের সবচেয়ে কম উচ্চতার চিকিৎসক রয়েছেন ভারতেই
উচ্চতা তাঁর মাত্র ৩ ফুট। নম্বর থাকা সত্ত্বেও উচ্চতার জন্য চিকিৎসক হতে চেয়ে প্রথমে বাতিল হয়েছে তাঁর আবেদন। কিন্তু তাঁর অদম্য জেদে তিনি জয় করেন সব বাধা।

৩ ফুট উচ্চতা নিয়ে একজন মানুষ যত না নিজে কুণ্ঠিত থাকেন, তার চেয়ে অনেক বেশি তাঁকে কুণ্ঠিত করে তোলে সমাজ। সমাজের একটা অংশের মানুষ তাঁর প্রতি বিদ্রূপাত্মক বক্তব্য দিনের পর দিন পেশ করতে থাকেন।
যা ছোট থেকে বড় হতে গিয়ে বার বার ওই কম উচ্চতা সম্পন্ন মানুষদের মনোবল ভেঙে দেয়। নিজের প্রতি হীনমন্যতা তৈরি করে। গণেশ বারাইয়া কিন্তু মাত্র ৩ ফুট উচ্চতা নিয়ে নানা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ শুনেও আত্মবিশ্বাস হারাননি। বরং তিনি স্কুল জীবনে যে লক্ষ্য স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য পূরণ করে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
স্কুলে ভাল ছাত্র ছিলেন তিনি। চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনার জন্য যে জাতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করতে হয়, সেই পরীক্ষাতেও তিনি সফল হন। কিন্তু প্রথম ধাক্কাটা খান যখন তাঁর নম্বর থাকা সত্ত্বেও কেবল তাঁর উচ্চতার কারণে তাঁকে কোনও মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র হতে দিচ্ছিল না গুজরাট সরকার।
কিন্তু গণেশ হেরে যাননি। বরং তিনি তাঁর চিকিৎসক হওয়ার দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। দেশের শীর্ষ আদালত তাঁর আবেদনে সাড়া দেয়। তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশও জারি করে।
সুপ্রিম নির্দেশে ভর করে গুজরাটের ভাবনগর জেলার গোর্খি গ্রামের বাসিন্দা গণেশ বারাইয়া ভাবনগর মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। হয়ে ওঠেন এমবিবিএস চিকিৎসক।
এমবিবিএস পাশ করার পর ওই মেডিক্যাল কলেজেই তিনি এখন চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত। রোগীরা ৩ ফুট উচ্চতার খুব বেশি হলে ১৮ কেজি ওজনের একজন বামন মানুষকে দেখে প্রাথমিকভাবে যাই মনে করুন না কেন, চিকিৎসক গণেশ চিকিৎসা শুরু করলে তাঁরা বুঝতে পারেন তাঁর চিকিৎসক হিসাবে দক্ষতা সম্বন্ধে।
এখন একজন সফল চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত গণেশ বারাইয়া। নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে তাঁর এই লক্ষ্য পূরণ তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি জীবনের পাঠও বটে।
যে পরিবারে গণেশের জন্ম সে পরিবারের কেউ কখনও কলেজের মুখ দেখেননি। সেখানে তিনি তাঁর ৩ ফুট উচ্চতা নিয়ে একজন সফল চিকিৎসক। বিশ্বের সবচেয়ে কম উচ্চতার এই চিকিৎসককে নিয়ে লেখালিখিও কম হয়নি।