National

বিদেশে হারিয়ে গিয়েছিলেন, দেশে ফিরলেন ৪২ বছর পর, মাঝের সময়টা শুধুই যন্ত্রণা

বিদেশে গিয়েছিলেন একটা সোনালি ভবিষ্যতের আশায়। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর পর তাঁর সঙ্গে যা ঘটে তারপর ৪২ বছর ধরে শুধু যন্ত্রণাই সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে।

Published by
News Desk

সময়টা ১৯৮৩ সাল। অনেকেই সোনালি ভবিষ্যৎ আর ভাল রোজগারের আশায় পৌঁছে যাচ্ছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে। সেখানে ভাল রোজগার করে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল প্রধান লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যেই তিনি ভারত থেকে যুবা বয়সে পৌঁছে যান বাহরাইন।

সেখানে কাজ করে রোজগার করে একসময় দেশে ফিরে আসা ছিল তাঁর ভাবনা। বাহরাইন পৌঁছেও যান। যেখানে কাজ করবেন সেটাও স্থির ছিল। কিন্তু সমস্যা হল তিনি বাহরাইন পৌঁছনোর পরই অকালে চলে যান তিনি যাঁর কাছে কাজ করছিলেন তিনি।

মালিকের এই অকালে পৃথিবী ত্যাগ কেরালার তিরুবনন্তপুরমের কাছের একটি গ্রামের বাসিন্দা গোপালন চন্দ্রণকে আতান্তরে ফেলে দেয়। তাঁর পাসপোর্টটিও তিনি আর ফেরত পাননি।

বাহরাইনে তিনি তখন সবকিছু হারিয়ে উদভ্রান্তের মত ঘুরতে থাকেন। ফিরতে চান নিজের দেশ ভারতে। কিন্তু সে উপায়ও নেই। পাসপোর্ট না থাকায় ফেরার পথও বন্ধ। এরপর দিনরাত শুধু একাকীত্বের যন্ত্রণা সহ্য করে গেছেন তিনি।

ভারতে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও প্রায় বন্ধ। বুঝতে পারছিলেননা কীভাবে দেশে ফেরা যাবে। কিছু কাজ খুঁজে জীবনটা চালিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। শুধু আশা ছিল একদিন না একদিন তিনি কেরালায় ফিরবেনই।

এভাবে কেটে যায় ৪২টি বছর। অবশেষে প্রবাসী লিগাল সেল নামে একটি এনজিও তাঁকে ফেরানোর উদ্যোগ শুরু করে। অনেক লড়াই করে তারাই অবশেষে ৪২ বছর পর গোপালন চন্দ্রণকে ফিরিয়ে আনল ভারতে।

এখন গোপালনের বয়স ৭৪ বছর। জীবনের অমূল্য সময়টাই তাঁর কেটে গেল বাহরাইন থেকে দেশে ফেরার আকাঙ্ক্ষা বুকে নিয়ে প্রতিটি দিন চরম যন্ত্রণায় মধ্যে কাটিয়ে।

গোপালনের মা এখনও বেঁচে আছেন। ৯৫ বছর বয়সেও সেই বৃদ্ধা কিন্তু ছেলেকে ফেরার আশা ছাড়েননি। অবশেষে ৪২ বছর পর ছেলেকে কাছে পেলেন বৃদ্ধা মা।

Share
Published by
News Desk