নারী, প্রতীকী ছবি
পরিবারে দারিদ্র চরমে পৌঁছেছিল। আর ঠিক সেই সময় দিল্লিতে একটি চাকরি আছে বলে জানায় এক ব্যক্তি। দারিদ্র ঘোচাতে পরিবারের ১৭ বছরের মেয়েকে দিল্লি পাঠাতে রাজি হয়ে যান বাবা মা।
দিল্লিতে কাজ করে মাইনে পাবে। তা দিয়ে সংসারের অনটন কিছুটা হলেও মিটবে বলে একরাশ আশা নিয়ে ট্রেনে চেপে বসে ওই কিশোরী। ট্রেন ঝাড়খণ্ড থেকে ছোটে দিল্লির দিকে। সঙ্গে ওই ব্যক্তি।
কিন্তু ট্রেন কিছুটা এগোনোর পরই রাসমণি বুঝতে পারে দিল্লিতে তাকে কোনও সৎ কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছেনা। অগত্যা সে ওই ব্যক্তির চোখে ধুলো দিয়ে ফতেপুর স্টেশনে নেমে যায়।
ফতেপুর স্টেশন চত্বরে রাসমণিকে ঘুরে বেড়াতে দেখে তাকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ। তারপর তাকে স্থানীয় একটি হোমে পাঠানো হয়। তার বাড়ির খোঁজও শুরু হয়। কিন্তু রাসমণি তার ঠিকানা জানাতে পারেনি।
এদিকে ফতেপুর থেকে রাসমণিকে পরে আমেদাবাদে একটি মহিলা আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর হালেই তাকে লখনউতে একটি মহিলা আশ্রমে নিয়ে আসা হয়। ২৩ বছরের রাসমণির যাতে আধার কার্ড তৈরি হয় তার জন্য উদ্যোগ শুরু হয় হোমের পক্ষ থেকে।
এই আধার কার্ড তৈরি করতে গিয়েই শুরু হয় সমস্যা। তার আবেদন ৬ বার নাকচ হয়। কারণ খুঁজতে গিয়ে সপ্তমবারে দেখা যায় কম্পিউটার রাসমণির আবার আধার কার্ড বানানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে দেখায়।
লখনউয়ের ওই হোমের দায়িত্বে থাকা সুপার আরতি সিং বুঝতে পারেন রাসমণির আগে আধার কার্ড হয়েছিল। সেই কার্ডের হদিশ মেলে অনেক খোঁজের পর।
কম্পিউটারে সেই কার্ডের সঙ্গে রাসমণির ঠিকানাও ফুটে ওঠে। দেখা যায় তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। এরপর ব্যবস্থা করে রাসমণিকে ঝাড়খণ্ডে তার বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
দিনমজুরের পরিবার তাদের মেয়েকে যে কোনওদিন ফিরে পাবে সে আশা প্রায় ছাড়তে বসেছিল। অবশেষে ৫ বছর নিরুদ্দেশ থাকার পর ২৩ বছরের রাসমণি ফিরলেন মায়ের কোলে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা