রামানা রাও, ছবি - আইএএনএস
রবিবার মানেই সপ্তাহ শেষে একটা অলস দিন। কখনও আত্মীয় পরিজনের বাড়ি যাওয়া, নয়তো আশপাশে বেড়াতে যাওয়া, নয়তো নিছক খেয়ে শুয়ে কাটিয়ে দেওয়া। কিন্তু এমন একটা রবিবার তাঁর ভাগ্যে গত ৪৯ বছরেও জোটেনি।
বৃষ্টিতে চারধার ভেসে যাক বা প্রখর গরমে পিচগলা অবস্থা হোক, তিনি সকাল হলেই বেরিয়ে পড়েছেন তাঁর ক্লিনিকের উদ্দেশে। সেখানে যখন তিনি পৌঁছন তখন লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। মানুষ অধীর অপেক্ষায়।
তিনি তাঁর ক্লিনিকে প্রবেশ করে শুরু করেন রোগী দেখা। আশপাশের ৫০টি গ্রামের দরিদ্র মানুষের অসুখে বিসুখে বড় ভরসা এই ক্লিনিক।
সেখানকার ডাক্তারবাবু নিজের রবিবারের ছুটি বিসর্জন দিয়ে প্রতি রবিবার বিনা পয়সায় রোগী দেখেন। চেষ্টা করেন রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধটাও তাঁদের হাতে তুলে দিতে। তাও বিনা মূল্যে।
কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু শহরের কাছেই টি বেগুরে এই রবিবারের ক্লিনিক-এর কথা এখন সকলের জানা। চিকিৎসক রামানা রাও সেই ১৯৭৩ সালে শুরু করেছিলেন এই রবিবারের বিনা পয়সার ক্লিনিক। যা আজও কোনও রবিবার বন্ধ থাকেনি।
৪৯ বছর ধরে নিরলসভাবে রবিবার এলেই রামানা রাও চলে আসেন রোগী দেখতে। একটা টাকাও ফি না নিয়ে। এখনও প্রতি রবিবার এখানে পায়ে হেঁটে, গরুর গাড়ি চড়ে, সাইকেলে চেপে, ট্রাক্টরে চেপে মানুষ দূরদূরান্তের গ্রাম থেকে রোগী নিয়ে হাজির হন এই ক্লিনিকে। লম্বা লাইন সাপের মত এঁকে বেঁকে চলে যায়।
এখন রামানা রাও পাশে পেয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে। তাঁরাও এই কর্মযজ্ঞে শামিল হয়েছেন। তাঁর এই সেবাধর্মের জন্য পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন রামানা রাও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা